জ ই বুলবুল, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সরকারি বিধি-নিষেধ তোয়াক্কা না করে খোলাবাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। উপজেলার নবীনগর পৌর শহরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট-বাজারে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ বিক্রি করছে তারা। দুষ্কৃতিকারীদের জন্য এগুলো সহজলভ্য হওয়ায় এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনাও। এছাড়া সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পৌর শহরের ২/৩ টি দোকান ছাড়া জ্বালানি তেল বিক্রির বৈধ লাইসেন্সের অনুমোদন নেই উপজেলাজুড়ে কারোরই। অবৈধভাবে অনুমোদনবিহীন সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে শুধু পৌর শহরেই প্রায় ১০টি জ্বালানি তেল বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকান যেমন অবৈধ,তেমনি এদের তেল সংগ্রহ পদ্ধতিও অবৈধ। এছাড়াও ইউনিয়নগুলোতে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। আর এসব দোকান থেকে নাশকতাকারীরা জ্বালানি তেল ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালাতে পারবে খুব সহজেই, এমনটা জানিয়েছে সুশীল সমাজের অনেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত আইন অনুসারে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। এই জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য আধাপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র এবং ট্রেড লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু উপজেলার অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব লাইসেন্সের তোয়াক্কা না করে পৌরসভা কার্যলয়/ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবসা পরিচালনা করছে। এভাবে জ্বালানি তেল বিক্রিতে সাধারণ মানুষ থাকে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা। রাসায়নিক সারের দোকান, এলপিজির দোকানেও চলছে অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল ও কেরোসিন বিক্রি। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাইপথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্যান্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে তেল বিক্রি করা হয়। মাপে কম দেওয়াও অবৈধ তেল ব্যবসায়ীদের আরেকটি প্রবণতা রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, এসব নিম্নমানের ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এই তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে এবং ইঞ্জিন থেকেও বেশি শব্দ হয়। এসব ভেজাল চোরাই তেলে গাড়ির মাইলেজ কমে যায়।
শহরের তিতাস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী দুলাল সাকী বলেন, অবৈধভাবে অনেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের কারো কাছেই বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নি নির্বাপক অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই।
মুখলেস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোখলেছ জানান, অবৈধভাবে অনেকেই জ্বালানি তেলের ব্যবসা করছে, কিন্তু আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে ভেবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনে কোন অভিযোগ করি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, খুব দ্রুতই অবৈধ জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available