স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট: সিলেট সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে ভুয়া ইন্টার্নশিপ সনদ দিয়ে এবং ইন্টার্নশিপ ছাড়াই পাওয়া যায় ইউনানি বোর্ডের চিকিৎসক নিবন্ধন। এ চক্রের নেপথ্যে কাজ করছেন কলেজের দপ্তরি সোহেল রানা।
খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে পাওয়া যায় নানান অভিযোগ ও প্রমাণাদি। সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার শেরপুর গ্রামের মো. আর্জমন্দ আলির পুত্র মো. লায়েক আহমদকে ভুয়া ইন্টার্নশিপ দেখিয়ে পেশাগত চিকিৎসক নিবন্ধন যার নং এ-১৬৮৯ দেয়া হয়েছে। অথচ, মো. লায়েক আহমদ সরকারি তিব্বিয়া কলেজ থেকে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেননি। সাবেক শিক্ষক ও অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ইন্টার্নশিপ সনদ দেখিয়ে তিনি এ সনদ পেয়ে যান।
মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কলেজের একটি চক্র তাকে এই সনদ পাইয়ে দেয়। কেবল লায়েকই নয়, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সিলেট সরকারি ইউনানি আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হতে ভুয়া ইন্টার্নশিপ সনদ হাসিল করেন কানাইঘাট উপজেলার পাত্র মাটি গ্রামের আব্দুল করিমের পুত্র অলিউর রহমান। তার নাম তিব্বিয়া কলেজের ইন্টার্নি রেজিস্টারে নেই, এমনকি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ফুলবাড়ি আজিরিয়া মাদ্রাসা থেকে অলিউর কখনো দাখিল পাশই করেননি। তারপরও অলিউর রহমানকে ইউনানি বোর্ড থেকে ডিইউএমএস পাশ সনদ দেয়া হয়েছে, যার নং ৮৬৬। ডিইউএমএস পেশাগত সনদের পাশাপাশি ইউনানি এ-ক্যাটাগরির চিকিৎসক নিবন্ধনও পেয়ে যান, যার নং এ-১০৩৪।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বোর্ড সদস্য মো. মনোয়ার হোসেন সোহেল এর নাম ইন্টার্নশিপ রেজিস্টারে না থাকা সত্ত্বেও অনিয়মের আশ্রয়ে চিকিৎসক নিবন্ধন নিয়ে সিলেট বিভাগে বোর্ড সদস্য হয়েছেন। সিলেট সরকারি ইউনানি আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও ইউনানি বোর্ড সূত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির আরও বহু প্রমাণ পাওয়া যায়।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার মো. আশরাফ আলী পুত্র জাহেদুর রহমান জাহেদের নাম ইন্টার্নশিপ রেজিস্টারে নেই এবং এসএসসি বা দাখিল পাশের কোনো সনদ না থাকলেও দপ্তরি সোহেল রানাকে ম্যানেজ করে ডিইউএমএস পাশের প্রশংসাপত্র ও ইন্টানিশিপ সনদ পেয়েছেন। জকিগঞ্জের আব্দুল আজিজের মেয়ে দিনা আক্তার সরকারি ইউনানি কলেজে পড়াশোনা করে সনদ পেয়েছেন আয়ুর্বেদিক বিভাগের ডিএএমএস। দিনার নামও ইন্টার্নি রেজিস্টারে নেই, অথচ যাদুবলে তিনিও পেয়ে যান ইউনানি চিকিৎসক নিবন্ধন, যার নং-১২৩৬।
অনুসন্ধানে এ সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির মূলে ইউনানি বোর্ডের সাবেক রেজিস্টার একেএম হারুনুর রশিদের নাম উঠে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি তিব্বিয়া কলেজের দপ্তরি সোহেল রানা ও সিলেট বিভাগের ইউনানি বোর্ড সদস্য মো. মনোয়ার হোসেন সোহেলের নেতৃত্বে একটি চক্র হারুনকে এ কাজে সহযোগিতা করছে। এদিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে সিলেট বিভাগের ইউনানি চিকিৎসক, শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহলে। তারা অবিলম্বে এসব পেশাগত চিকিৎসক সনদ বাতিল এবং এর সাথে জড়িত হারুন, সোহেল, মনোয়ারসহ পুরো চক্রের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available