• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৮ই পৌষ ১৪৩১ বিকাল ০৪:৫৭:২৭ (22-Dec-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৮ই পৌষ ১৪৩১ বিকাল ০৪:৫৭:২৭ (22-Dec-2024)
  • - ৩৩° সে:

মতামত

স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত রাস্তাঘাট ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণ: ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তা

১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সকাল ১০:৪০:১০

স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত রাস্তাঘাট ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণ: ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তা

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হুসাইন: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এক শ্রেণির নেতা ও কর্মকর্তারা তাদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সেতু ইত্যাদির নাম নিজেদের বা পরিবারের সদস্যদের নামে নামকরণ করার চেষ্টা করছেন। এই প্রবণতা একদিকে যেমন জাতীয় ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে ম্লান করছে, অন্যদিকে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশার জন্ম দিচ্ছে।  

এই অবস্থায় একটি প্রস্তাব সামনে এসেছে, যা জাতীয় ঐতিহ্য ও এলাকার নিজস্ব পরিচয় রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রস্তাবটি হলো, ১৯৭১ সালের পর সরকারি অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত রাস্তাঘাট ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম স্থানীয় এলাকার নাম অনুযায়ী নির্ধারণ করা উচিত। একইসঙ্গে, ১৯৭১ সালের পূর্বে যে সব প্রতিষ্ঠান যে নামে পরিচিত ছিল, তাদের সেই নাম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।  

বিশ্ব ইতিহাসে দেখা যায়, অনেক দেশ তাদের ঐতিহ্য ও পরিচয় সংরক্ষণে সচেতন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের দিল্লীতে ‘সফদার জং’ নামক একটি হাসপাতালের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীর নামে। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এই প্রস্তাব বাতিল করেন এবং পরামর্শ দেন, ইন্দিরা গান্ধীর নামে নতুন কোনো হাসপাতাল স্থাপন করতে। সফদার জং ছিলেন ব্রিটিশ আমলের এক মহান দানবীর, যার সম্মানে এই নামকরণ করা হয়েছিল। সেই ঐতিহ্যকে পরিবর্তন করা হয়নি।  

অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠার পূর্বে ড. আল্লামা ইকবালের নামে দিল্লিতে "ইকবাল একাডেমি" প্রতিষ্ঠা করা হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পরও এর নাম পরিবর্তন বা বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটি দেখায়, ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতি এক ধরণের শ্রদ্ধা।  

বাংলাদেশে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা অত্যন্ত জরুরি। একটি রাস্তাঘাট বা প্রতিষ্ঠানের নাম শুধু একটি নাম নয়; এটি একটি এলাকার মানুষের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং অনুভূতির অংশ। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের স্বাধিকার যেন কোনোভাবেই ব্যক্তি স্বার্থের কাছে হারিয়ে না যায়।  

সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসনকে এই বিষয়ে যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে হলে, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে যে, নামকরণ শুধু একটি পরিচয় নয়, বরং একটি দায়িত্বও।  

জাতীয় ঐতিহ্য রক্ষার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের ইতিহাসকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হলে নামকরণের ক্ষেত্রে সতর্কতা ও নীতিবোধ অবলম্বন করা জরুরি। নতুন প্রকল্প বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণে ব্যক্তিগত স্বার্থ পরিহার করে স্থানীয় ঐতিহ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।  (সংক্ষেপিত ও পরিবর্ধিত)

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ





বদলানো হলো ‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর’ নাম
২২ ডিসেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৩:৩৮:৩৮