হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) প্রশাসনের উদ্যোগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দিনাজপুর জেলায় নিহত শহীদ রাহুল স্মরণে শোক ও আহতদের আরোগ্য কামনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় অডিটোরিয়াম-১ এ এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শহীদ রাহুলের মমতাময়ী মা মোছা. ফরিদা বেগম, বড় ভাই মো. আল আমিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, হল সুপারবৃন্দ, বিভিন্ন শাখার পরিচালকবৃন্দসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. এস. এম. এমদাদুল হাসান। সঞ্চালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক প্রফেসর ড. নিজাম উদ্দিন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও গীতা থেকে পাঠ করা হয় এবং শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে শহীদ রাহুলের বড় ভাই মো. আল আমিন বলেন, সকলের কাছে আমার একটাই অনুরোধ রাহুলদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল দেশ পেয়েছি, আমাদের সবাইকে মিলেই এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলনে হাজারো বাবা মায়ের কোল ও ভাইয়ের বুক খালি হয়েছে। আমরা সবাই যে উদ্দেশ্যে একসাথে লড়েছি, সামনেও যেন আমাদের মধ্যে এই ঐক্য অটুট থাকে।
সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, রাহুলসহ অন্য শহীদ ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আপনারা ভুলে যাবেন না, তাদের পাশে থাকবেন। আমরা যেন অনুভব করতে পারি আমাদের সাথে হাজারো ভাই, হাজারো ছেলে আছেন। এ ধরণের আয়োজনের জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং সকল শহীদদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা জুলাই বিপ্লব বলতে বুঝি বাংলাদেশের বিপ্লব। এই বিপ্লবের ফসল তখনই কার্যকর হবে যখন আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাই সবার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা বলেন, জুলাই-আগস্ট দুই মাসের বিপ্লবে এমন কিছু ঘটনা ঘটে গেছে, যা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের বুকে স্পন্দন যুগিয়েছে এই আন্দোলন। এই আন্দোলনে আবু সাঈদ, মুগ্ধ, রাহুলসহ প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন, আমি তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, উনাদের আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।
আজ আমরা অত্যন্ত ছোট পরিসরে আজকের এই স্মরণসভা আয়োজন করেছি। আপনারা গর্ববোধ করবেন যে দিনাজপুর থেকে একজন তরুণ তার বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমরাও শহীদ রাহুলের এই আত্মত্যাগের জন্য গর্ববোধ করি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সফল হয়েছে এই মানুষ গুলোর রক্তের বিনিময়ে। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি শহীদ রাহুলের গর্বিত মা কে, তিনি আজ আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন।
তিনি আমাদের সকলের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এবং আমি আশা করি, আমরা সবসময় রাহুলের পরিবারের পাশে থাকবো। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সকল শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভসহ রাহুলের পরিবারের জন্য যদি কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় সে লক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আলোচনা সভা শেষে ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয় শহীদ রাহুলের পরিবারের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available