ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি: যেসব অভিভাবক রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, যাদের আমাদের পরবর্তী ভবিষ্যৎটা আরও মসৃণ করার কথা ছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে বিধায় ২০২৪ এর এই তরুণ প্রজন্মকে গুলির সামনে দাঁড়াতে হয়েছে। সুতরাং পরবর্তী বাংলাদেশে বির্নিমাণে দৃঢ় চিত্তে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ রক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দাসত্ব থেকে মুক্ত থাকতে সতর্ক থাকতে হবে। ১১ ডিসেম্বর বুধবার 'জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকা কলেজের অবদান' শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তরা।
বেলা ১১টায় ঢাকা কলেজে শহীদ আ.ন.ম নজিব উদ্দিন খররম অডিটোরিয়ামে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী মইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, নির্বাহী সদস্য তারেকুল ইসলাম, মোহাম্মদ রাকিব, সুমাইয়া শ্রেষ্ঠা, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান। এছাড়াও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকা কলেজের নির্যাতিত ও আহত শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের সংগ্রামী দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেন।
আলোচনা সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের ১৬ বছরের আঘাত টকশো বুদ্ধিজীবী ভারত থেকে যাদের অর্থায়ন করা হয় তাদের কথা শুনে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আওয়ামী জাহিলিয়াতের নির্যাতন ও নিপীড়নের কথা বার বার মনে করতে হবে। বর্তমানে আমাদের তরুণদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। যারা আমাদের অভিভাবক রয়েছে, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পূর্ব প্রজন্ম যারা রয়েছে তাদের কাছে থেকে আমরা অভিজ্ঞতা নিবো। তাদের অভিজ্ঞতা এবং এ তরুণ প্রজন্মের সাহস এই দুটির সংমিশ্রণে আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ বির্নিমিত হবে।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিগুলোকে একত্রিকরণের ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখনও পর্যন্ত মাঠে রয়েছে উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, কোনো শক্তি যদি মনে করে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে মাইনাস করে দিয়ে পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে, ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে গিয়ে তরুণ প্রজন্মকে মাইনাস করে দিয়ে নিজেরাই সংসদের দিকে যাত্রা করবে তাহলে তারা সেটা ভুল ভাবছে।
তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমার একটি জেনারেশন কনফ্লিক্টের মধ্যে রয়েছি। প্রতিনিয়ত আপনার মস্তিষ্ক দখল নিতে, আপনার মেরুদণ্ডকে দাসের আওতাভুক্ত করতে আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম সতর্ক দৃষ্টিতে রয়েছে। কারণ তারা এই তরুণ প্রজন্মের প্রশ্নকে ভয় পায়। তারা এই তরুণ প্রজন্মের আপোসহীন মনোভাবকে ভয় পায়।
ঢাকা কলেজকে শিক্ষাঙ্গন হিসেবে ফাংশন করতে দেওয়া হয় নাই অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধার স্ফূরণ ঘটাতে দেওয়া হয় নাই। ঢাকা কলেজ থেকে যাতে সেরা সেরা রাজনীতিবিদ, বিশ্বসেরা গবেষক, শিক্ষাবিদ হতে পারে এমন কোনো পরিবেশ এখানে থাকতে দেওয়া হয় নাই। আজকের আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে ঢাকা কলেজে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করার সংগ্রাম।
আলোচনা সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, জুলাইয়ের পর থেকে স্বৈরাচারের কোনো বুলেটকে ছাত্রজনতা আর ভয় পাই নাই। প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছিল কে কার আগে বুলেটের সামনে দাঁড়াবে। স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমরা আজকে এই মঞ্চে দাঁড়িয়েছি। যদি আবারো কেউ নব্য স্বৈরাচার হয়ে ওঠার চেষ্টা করে তাহলে আমাদের এই বুকটা সবসময় পাতা থাকবে ইনশাল্লাহ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available