বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নবীন শিক্ষার্থীদের গেস্টরুম করানোর ঘটনায় ১ বছরের জন্য হল থেকে ২৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
১৩ জানুয়ারি সোমবার সকালে বিষয়টি জানিয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী হলে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তাদের বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতদের মধ্যে ওই হলের লেভেল-১, সেমিস্টার-২, লেভেল-২, সেমিস্টার-২ এবং মাস্টার্সের একজন শিক্ষার্থী রয়েছে। ঘটনা জানার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন গতকাল রাতে (১২ জানুয়ারি) হলে গিয়ে গেস্টরুম করানোর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
জানা যায়, শনিবার রাত ৯টায় হলের রিডিং রুমে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে ডাকা হয়। সকলের মোবাইল ফোন রুমে রেখে আসতে বলা হয় এবং গেস্টরুমের শুরুতেই কারোর কাছে মোবাইল আছে কি না সেটি তল্লাশি করা হয়। এরপরে ২য় বর্ষের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী হলের কিছু উদ্ভট নিয়ম (সাইকেল চালানো যাবে না, ২য় তলায় যাওয়া যাবে না, বড় ভাইদের সাথে দিনে যতবার দেখা হবে ততবার সালাম,পরিচয় ও হ্যান্ডশেক করতে হবে, হলে লুঙ্গি পড়া যাবে না, হলের গ্রন্থাগারে ল্যাপটপ নিয়ে যাওয়া যাবে না, হলের ক্যান্টিনে যাওয়া যাবে না ইত্যাদি)। নবীন শিক্ষার্থীদেরকে জানান এগুলো তাদেরকে মানতেই হবে। এরপরে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা এসে নবীনদের কিছু দাবি-দাওয়া জানতে চান। নবীনরা তাদেরকে হলভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যার কথা জানায়। এরপরে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা চলে গেলে ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা নবীনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। বড় ভাইদের কাছে নবীনরা সমস্যাগুলো বলেছি এটিই ছিল তাদের অপরাধ। এরপরে ছোটোখাটো ভুল উল্লেখ করে (হাত বাঁকা রেখে দাঁড়ানো, হাত সামনে রেখে দাঁড়ানো, মাথা উঁচু বা নীচু করে রাখা ইত্যাদি) নবীনদের একজন একজন করে ডেকে ডেকে গালিগালাজ করা হয় এবং বিভিন্ন উদ্ভট শাস্তি দেওয়া হয় (১০ রকমের হাসি, ১০ রকমের সালাম, গাছে ঝুলে থাকার অভিনয় করা, নাচ করা ইত্যাদি)। এমন পরিস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ১ম বর্ষের একজন মাথা ঘুরে পড়েও যায়। পরে তাকে হলের মধ্যেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নবীনদের গেস্টরুম শেষ হয়।
এ বিষয়ে বাকৃবি সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলের ঘটনায় ৫২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭ জন সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্র। আর বাকিদের অ্যাটাচমেন্ট অন্য হলে । কিন্তু তারা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকে। সোহরাওয়ার্দী হলের ২৭ জনকে হল থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। অধিকতর শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে প্রেরণ করা হবে। যারা এ হলের ছাত্র না কিন্তু অবৈধভাবে থাকে এবং এ ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available