ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: দেশের ১৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং যুব ও ক্রীড়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, দেশের ৫৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩টির নামই শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নামে ছিল। এর মধ্যে শেখ হাসিনার নামে দুটি, শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নয়টি এবং শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক উত্থাপিত এসব নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদে পাস হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশিরভাগের নাম সংশ্লিষ্ট জেলার নামে পরিবর্তন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ এর শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি‘ করার দাবিতে গত পাঁচ মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি না মেনে বিশ্ববিদ্যালয়টির পরিবর্তিত নাম রেখেছে ‘মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’। শিক্ষার্থীরা সরকারের দেওয়া এ নাম প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৬ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় মিরপুরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের দাবির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম আশিক বলেন, যেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রথম দাবিই এটা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে 'বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি' সেখানে কীভাবে উপদেষ্টা পরিষদে অন্য কোনো নাম অনুমোদন করা হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত এই নামকে বয়কট করলাম। পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুততম সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ করা হোক। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখতে বাধ্য হবে।
মেরিটাইম শিক্ষার্থী তালহা বিন হাবিব জানান, ‘দেশের একমাত্র বিশেষায়িত মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এর নামের পূর্বে ‘বাংলাদেশ’ যুক্তিযুক্ত। ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ নাম হলে বিশ্বের অন্যান্য মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির সাথে নামের মিল হবে। এই নামের বিকল্প অন্য কোনো নাম গ্রহণ করার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, ইউজিসি অভিমুখে লং মার্চ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছে। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অবশ্যই 'বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি' করা। অত্যাধিক সেমিস্টার ফি হ্রাস করে শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত যৌক্তিক সেমিস্টার ফি পুনঃনির্ধারণ করা। চট্টগ্রামের হামিদচরে নির্মাণাধীন স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করে সেখানে স্থানান্তর করা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available