জাবি প্রতিনিধি: জাবিতে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
২৫ জানুয়ারি শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবেশ বিজ্ঞান ৫০ ব্যাচের মো. তানভীর রহমানকে আহ্বায়ক এবং আইন ও বিচার ৫০ ব্যাচের মো. ফয়সাল আহম্মেদ স্বাধীনকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি ঘোষণা করেন নিরাপদ সড়ক চাই কেন্দ্রীয় কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন। এসময় জাবি শাখার আহ্বায়ক এস এন সোহেল রানা ও সদস্য সচিব রুকাইয়া সরকার পাখি, সদস্য মো. হাবিবুর রহমান আসিফসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২৩ জানুয়ারি বিকালে নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন ও মহাসচিব একে এম আজাদ হোসেনের স্বাক্ষরে কমিটির অনুমোদন হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিনহাজুল ইসলাম, মো. তাওফিকুর রহমান।
সদস্য হিসেবে রয়েছেন- রাজীব হোসেন, দিদারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আসিফ, মাশফিকুর রহমান নাঈম, ফেরদৌস মোল্যা, ধ্রুব চন্দ্র মোদক, মো. আতিফ হোসেন, মো. তৌকির কিবরিয়া, মো. জাহিদ খান, বুবলী আহমেদ, এস.এম. আব্দুল্লাহ আল আমিন, নূসরাত জাহান, মুহাম্মদ আনাস বিন আলম, মো. আব্দুল রাহাদ, ফাহিম ফয়সাল, মো. আমানুল্লাহ ও জাবির মাহমুদ।
কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন- অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম, ডিন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, জাবি। অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম, ডিন, আইন অনুষদ, জাবি। অধ্যাপক ড. মো. সোহেল রানা, সভাপতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অধ্যাপক ড. আইরিন আখতার, সাধারণ সম্পাদক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন, চেয়ারম্যান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জাবি। অধ্যাপক মাসুম শাহরিয়ার, কোষাধ্যক্ষ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলম, প্রক্টর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। শামীমা নাসরীন জলি, সহকারী প্রক্টর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
কমিটিতে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছেন- ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাবি। কামরুল হাসান, সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাবি। মো. ইমরান হোসেন, যুব বিষয়ক সম্পাদক, নিরাপদ সড়ক চাই কেন্দ্রীয় কমিটি। মো. সোহেল রানা, প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক, নিরাপদ সড়ক চাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। মো. হাবিবুর রহমান আসিফ, সাবেক সদস্য, নিরাপদ সড়ক চাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
কেন্দ্রীয় কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন বলেন- আমরা সবাই অবগত আছি যে, নিরাপদ সড়ক চাই স্বেচ্ছাসেবী জাতীয় সামাজিক সংগঠন। এক মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক ঘটনার মধ্য দিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের শুরু। ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইলিয়াস কাঞ্চনের সহধর্মিনী জাহানারা কাঞ্চন। প্রাণপ্রিয় স্ত্রী হারানোর সেই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গড়ে তোলেন এক সামাজিক আন্দোলন- নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)।
সুদীর্ঘ ৩১ বছরের পথ পরিক্রমায় আন্দোলন আজও চলমান। আমাদের উদ্দেশ্য এটাই সড়কের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা। সেই লক্ষে নিরাপদ সড়ক চাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পুনরায় পথচলা শুরু হলো। যেহেতু আমাদের আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর এলাকা বেশ বড়। এখানে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ সড়কসমূহকে নিরাপদ করার লক্ষে আজকের এই কমিটি গঠিত হয়েছে। আমি আশা ও বিশ্বাস করি সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে আমরা সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।
নবনির্বাচিত কমিটির আহ্বায়ক মো. তানভীর রহমান বলেন, একটি দুর্ঘটনা ও হারানোর বেদনা মনে কতটুকু গভীর ক্ষত তৈরি করতে পারে তা ইলিয়াস কাঞ্চনের জীবনী দেখলেই বোঝা যায়, এই সংগঠন শুধু তাঁর অর্ধাঙ্গিনী হারানোর অনুভূতি থেকেই তিনি তৈরি করেননি বরঞ্চ লাল-সবুজের বাংলার সড়কগুলোয় প্রতিদিন যারা তাদের প্রিয়জন হারায়, তাদের সকলের অনুভূতি একীভূত করে তৈরি করেছেন। ২০১৮ সাল তিতুমীর কলেজের রাজীবের হাতটি যখন দুটি বাসের চাপায় একদম ছিটকে যায় একটি পরিবার তার চালিকাশক্তি হারায়। ২০১৮ সালের আরেকটি ঘটনা, শহীদ রমিজউদীন ক্যন্টের ২জন শিক্ষার্থী জাবালে নূর পরিবহনপর চাপায় পিষ্ট হলে জোরেসোরে নিরাপদ সড়কের ব্যাপারটি সামনে আসে, কয়েকদিন যেতে না যেতেই তা থেমে যায়। আমরা সড়ক আইনের বাস্তবায়ন ফিরিয়ে আনবো, আমাদের কোনো বোন রাচি মারা যাবে না, এই বিশ্ববিদ্যালয় সকলের নিরাপদ ও নির্দিধায় চলার একটি ক্ষেত্র হবে, সেই লক্ষেই কাজ করে যাবে নিসচা জাবি শাখা ইনশাআল্লাহ। ইলিয়াস কাঞ্চনের সুরে সুর মিলিয়ে আমরা লক্ষ নিয়ে আগাই ইনশাআল্লাহ কোনো একদিন আমরা সড়ক দুর্ঘটনাকে শূণ্যে নামিয়ে আনতে পারবো।
নবনির্বাচিত সদস্য সচিব মো. ফয়সাল আহম্মেদ স্বাধীন বলেন, শুকরিয়া আদায় করছি মহান আল্লাহর নিকট। যিনি আজকে আমাদের এখানে মিলিত হবার সুযোগ দিয়েছেন। ১৯৯৩ সালের পহেলা ডিসেম্বর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা উপলব্ধি করে দেশব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে গঠন করেন- ‘নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠন’। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার দিনকে গুরত্ব দিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে প্রতিবছর ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। সারাদেশে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। ২০২২ সালের ৬ জুন সর্বপ্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন পায়। তারপর থেকেই জাবি শাখা ক্যাম্পাসের সড়ক নিরাপত্তাসহ ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম করে আসছে। অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন ও অসচেতন চলাচল যাতে আর কখনো কোনো প্রাণনাশের কারণ না হয়, সেই চাওয়া ই থাকবে, এবং সে বিষয়ে কাজ করে যাবে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) জাবি শাখা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available