হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে হাবিপ্রবি ছাত্রদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মী সম্মেলনকে ঘিরে ছাত্রদলের কর্মীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।
কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব, ছাত্রদলের ত্যাগের ইতিহাস এবং ছাত্রদলের বিভিন্ন কার্যক্রমসহ সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। ত্যাগী, সাহসী এবং ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে যারা, তাদেরকে বেছে নেওয়া হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও প্রকাশ্যে এই কর্মসূচি আয়োজন করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে ভেটেরিনারি অনুষদের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী কাউসার আহমেদ বলেন,‘গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা গুলোর অন্যতম একটি আকাঙ্ক্ষা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে লেজুড় বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করণ । গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী হাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে অফিস আদেশ জারি করা হয় ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের। ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী লেজুড় বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি চায় না। শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া, চাওয়া পাওয়া উপেক্ষা করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানো সত্যিই দুঃখজনক ও লজ্জাজনকও বটে।’
আরেক শিক্ষার্থী সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের মামুন মিয়া বলেন, যখন আপনি একজন ছাত্র এবং পাশাপাশি আপনি এক রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিনিধি তখন সমাজ আপনার কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করে। আপনি অন্য সাধারণ শিক্ষার্থীর চেয়ে আরও বেশি বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি আরও বেশি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন এটাই কাম্য। কিন্তু যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষেধাজ্ঞা তখন তা মান্য না করে কর্মীসভা করা, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানোর সমান এবং নিজেদের পেশিশক্তি প্রদর্শন বলে আমি মনে করছি। যা অতীতের নিষিদ্ধ আওয়ামী সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের সাথে মিলে যায়। তাই সকল প্রকার রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, নিজেদের পেশিশক্তি প্রদর্শন না করে, ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে ,ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি চর্চা না করা।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক বার্নার্ড পলাশ বলেন,‘আওয়ামী স্যারের স্বাক্ষরিত ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ অফিস আদেশ আমরা মানি না। গুণগত রাজনীতি পরিবর্তনের জন্য ক্যাম্পাসে অবশ্যই ছাত্ররাজনীতি প্রয়োজন আছে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘আজকের এই প্রোগামের বিষয়ে আমি এবং ছাত্র পরামর্শক কোনো ভাবেই অবগত ছিলাম না। যখন খবর পাই আমরা তাৎক্ষণিক প্রোগ্রাম স্থলে যায় তারপর ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের সাথে বসেছি এবং তাদের নিষেধ করেছি। তবুও তারা আয়োজন করেছে ।বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভঙ্গ করেছে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর কবীর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রক্টর এবং অ্যাডভাইজরের একটা রিপোর্ট দেওয়ার কথা। তারা আমাকে রিপোর্ট করলে তারপর আমি এ বিষয়ে বলতে পারবো।
কিন্তু এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এনামউল্যা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য যে, গত ১১ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে হাবিপ্রবি থেকে সকল ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available