• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৬ই বৈশাখ ১৪৩২ সন্ধ্যা ০৭:৪৯:৫৭ (19-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৬ই বৈশাখ ১৪৩২ সন্ধ্যা ০৭:৪৯:৫৭ (19-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:

ক্যাম্পাস

ভারতে গিয়েও ফেরেনি চোখের দৃষ্টি, বুটেক্স-পলিটেকনিক সংঘর্ষে চরম মূল্য

১৯ এপ্রিল ২০২৫ বিকাল ০৩:৫২:৩১

ভারতে গিয়েও ফেরেনি চোখের দৃষ্টি, বুটেক্স-পলিটেকনিক সংঘর্ষে চরম মূল্য

বুটেক্স প্রতিনিধি: ভারতে চিকিৎসা নিয়েও আঘাতপ্রাপ্ত চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাননি বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) মেধাবী শিক্ষার্থী উৎসব পাল। চোখের আইবল ও নার্ভ সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ায় ঐ চোখের পরবর্তী কোনো চিকিৎসা সম্ভব নয়।

গত বছরের ২৪ নভেম্বর বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় তার ডান চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে। এরপর দেশ-বিদেশ মিলিয়ে চিকিৎসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হলেও চোখটি আর রক্ষা করা যায়নি। ভারতের হায়দরাবাদের এক বিশেষায়িত হাসপাতালে সর্বশেষ চিকিৎসা নেন উৎসব। তবে চিকিৎসকরা জানান, তার চোখের আইবল ও নার্ভ সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেছে। ফলে বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানে কর্ণিয়া প্রতিস্থাপন করেও কোনো দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশেই দীর্ঘ সময় চিকিৎসা চলে উৎসবের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই সময়ে অর্থসহায়তা করে। এরপর গত মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইটিইটির আর্থিক সহায়তায় উৎসবকে ভারতে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে চোখের অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন-চোখের ভেতরের নার্ভ ও আইবল শুকিয়ে যাওয়ায় আর কোনো চিকিৎসায় সুফল মিলবে না। শেষে একটি কসমেটিক আই প্রতিস্থাপন করা হয়-যেটি দেখতে স্বাভাবিক চোখের মতো হলেও কোনো দৃষ্টিশক্তি দেয় না।

উৎসব পাল বুটেক্সের ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বিভাগের শীর্ষ মেধাবীদের একজন। সংঘর্ষের আগে নিয়মিত টিউশনের পাশাপাশি কোচিংয়ে পড়িয়ে নিজের খরচ নিজেই চালাতেন। কিন্তু চোখ হারানোর পর সেই আয় বন্ধ হয়ে যায়। পড়াশোনায় এসেছে বড়সড় ব্যাঘাত। তিনি যন্ত্রণাকে পাশ কাটিয়ে শেষ সেমিস্টার পরীক্ষা দিয়েছেন ঠিকই, তবে প্রতিটি পৃষ্ঠায় তার কলম চালানো ছিল এক ধরনের যুদ্ধ।

ভারতে অবস্থানকালীন সময়ে উৎসবের বড় ভাই উজ্জ্বল পাল নিজের চোখ উৎসবকে দান করতে চেয়েছিলেন। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানের বর্তমান অগ্রগতিতে পুরো চোখ (আইবল) প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। কারণ চোখের নার্ভগুলো মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং সেই নার্ভগুলো পুনরায় সংযোগ করার প্রযুক্তি এখনো নেই। শুধু মাত্র কর্নিয়া প্রতিস্থাপন সম্ভব, যেটি চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশ। তবে উজ্জ্বল পাল এসব জানতেন না। ভাইয়ের চোখ দিয়ে উৎসবকে দেখতে সাহায্য করতে চাওয়ার মধ্যে ছিল তার ভালোবাসা আর অসহায়ত্ব। 

উজ্জ্বল পাল বলেন, আমি ভেবেছিলাম, আমি যেহেতু বেসরকারি চাকরি করি, এক চোখ দিয়েই চলতে পারব। কিন্তু উৎসব তো একজন মেধাবী শিক্ষার্থী, ভবিষ্যৎ প্রকৌশলী-সে তো এক চোখ নিয়ে চলতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তাররা জানিয়েছেন উৎসবকে যদি দুর্ঘটনার সাথে সাথে ভারত আনা যেতো তাহলে হয়তো তার চোখ প্রতিস্থাপনের একটু হলেও আশা ছিল। কিন্তু ভিসা জটিলতাসহ প্রয়োজনীয় টাকার ব্যবস্থা করতে করতে আমাদের অনেক সময় চলে যায়। এছাড়া তখন দেশের পরিস্থিতিও স্বাভাবিক ছিল না, অনেকদিন ইন্ডিয়ান ভিসা পাওয়া যাচ্ছিল না। সব মিলিয়ে আর সাথে সাথে ভারত এনে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। তবে দেশে যা করা যায়, তার সর্বোচ্চটা আমরা করেছি।

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের মতে, বুটেক্স প্রশাসন চাইলে আর্থিক সাহায্যের ব্যাপারটা আরেকটু দ্রুততার সাথে করতে পারতো। তবে ওই সময় ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকায় ও শিক্ষকদের ব্যস্ততার কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

উল্লেখ্য, বুটেক্স-পলিটেকনিক সংঘর্ষের পরপরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তবে চার মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত জড়িতদের শাস্তির ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায়নি, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ



টঙ্গীর ২ শিশুকে হত্যা করেছেন তাদের মা: পুলিশ
১৯ এপ্রিল ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৯:১১