বাকৃবি প্রতিনিধি: ‘প্রাণীর স্বাস্থ্য রক্ষায় দলগত প্রচেষ্টা দরকার’ স্লোগানকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, কেক কাটা, আলপনা অঙ্কন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করে ভেটেরিনারি অনুষদ।
২৬ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন চত্বরের থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি গ্যালারির সামনে গিয়ে শেষ হয়।
পরে ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমানের সভাপতিত্বে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম নাজমুল হুসাইন নাজিরের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগের পরিচালক ডা: মনোরঞ্জন ধর, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঞা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন। এছাড়াও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষক ও বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. মকবুল হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ভেটেরিনারি দিবস পালন করা হচ্ছে। প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষ শনিবার ভেটেরিনারি দিবস পালন করা হয়। এবছর বিশ্বব্যাপী 'প্রাণীর স্বাস্থ্য রক্ষায় দলগত প্রচেষ্টা দরকার' প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী প্রাণি বাহিত বিভিন্ন রোগ, জুনোটিক রোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যখাতের সকলকে এমনকি মানুষের চিকিৎসক, প্রাণি চিকিৎসকের সম্মিলিত কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
আলেচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, প্রাণী চিকিৎসা ও শিক্ষা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে প্রত্যেক বছর নানান আয়োজনের মাধ্যমে এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। বাকৃবি ভেটেরিনারি শিক্ষার সূতিকাগার। ১৯৬১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগেও কলেজের মাধ্যমে প্রাণী চিকিৎসা বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হতো। বর্তমানে বিশ্বের ৭৫ শতাংশের অধিক রোগ প্রাণী থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়। তাই মানবজাতির সুরক্ষার জন্য প্রাণীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। তবে প্রাণীর সুরক্ষা প্রদান করা ভেটেরিনারিয়ানদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি দল গঠন করে প্রাণীর সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও প্রাণী চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারিয়ানদের আরও দক্ষ করে তুলতে হবে।
ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বাহানুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৪টি প্রতিষ্ঠানে ভেটেরিনারি শিক্ষা দেওয়া হয়। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। ডেইরি ও পোল্ট্রি গবেষণার উন্নয়নের জন্য সিরাজগঞ্জ ও গাজীপুরে গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও বাকৃবি শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের আবাসনের সুব্যবস্থার জন্য ঢাকার পূর্বাঞ্চলে ১০ তলা ভবন নির্মাণ এবং ইন্টার্নশিপের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available