• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১২ই বৈশাখ ১৪৩১ ভোর ০৫:১৮:০৬ (26-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১২ই বৈশাখ ১৪৩১ ভোর ০৫:১৮:০৬ (26-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

গ্রীষ্মের শুরুতেই তীব্র পানি সংকটে মণিরামপুরবাসী, নলকূপেও মিলছে না পানি

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: তীব্র গরমে যখন সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা তখনই পানি সংকটে পড়েছে যশোরের মণিরামপুরবাসী। গ্রীষ্মের শুরুতেই কমতে শুরু করেছে উপজেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। প্রতি বছরই গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হওয়ার আগে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকেই পানির স্তর নামতে শুরু করে। ফলে অধিকাংশ পাম্প ও নলকূপে পানি মিলছে না। দূর-দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে দৈনন্দিন ব্যবহৃত ও সুপেয় পানি।মণিরামপুর পৌরসভাসহ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে এ পানি সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে মণিরামপুর পৌর এলাকায় পানির স্তর ২৮ থেকে ৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে। এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিযোগ দিন দিন পানি সংকট গুরুতর হলেও মিলছে না স্থায়ী সমাধান। ফলে প্রতি বছরই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।সরজমিনে মণিরামপুর পৌরসভার মোহনপুর, তাহেরপুর, দুর্গাপুর, কামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার বাসাবাড়ির টিউবওয়েল ও পাম্পে পানি উঠছে না। পানি শূন্যতায় অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এসব নলকূপ ও পাম্প। ফলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের পানি সংগ্রহ করতে হয় দূর-দূরান্তের পানির উৎস থেকে। যেখানে সামান্য পানি পাওয়া যায় সেখানে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়।পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌর এলালায় সাপ্লাই পানির লাইন থাকলেও সেখানে পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ পাওয়া যায় না। দিনের অধিকাংশ সময় সাপ্লাই পানির সরবরাহ বন্ধ থাকে। তাদের অভিযোগ, নিয়মিত কর পরিশোধ করলেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোনো স্থায়ী সমাধানের পদক্ষেপ নিচ্ছে না।ভুক্তভোগীদের মতে, আগে ২০-৩০ মিনিট মোটর চালালেই বাড়ির ছাদের ট্যাংক পূর্ণ হয়ে যেত। ১৫-২০ দিন ধরে দুই-তিন ঘণ্টা মোটর চালালেও প্রয়োজনীয় পানি মিলছে না। এভাবে চলতে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে অনেকের বৈদ্যুতিক মোটর।শহরের তাহেরপুরের বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, বাৎসরিক পৌর কর নিয়মিত পরিশোধ করার পরও পৌরসভার বড় বড় সমস্যাগুলো কর্মকর্তারা দেখে না। এই পানি সমস্যা আজকের নয়, এটা দীর্ঘদিনের। প্রতিবছরই বিভিন্ন গণমাধ্যম আমাদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে, কিন্তু স্থায়ী সমাধানে সংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ নেই।কৃষক সেলিম উদ্দিন বলেন, শুধু হস্তচালিত টিউবওয়েলই নয়, শ্যালো মেশিনেও (গভীর নলকূপ) পানি কম উঠছে। মাঠে আগে যেখানে এক বিঘা জমি ভেজাতে ২ ঘণ্টা লাগতো, এখন সেই জমি ভেজাতে ৬ ঘণ্টা লাগছে।প্রত্যয় সমাজ উন্নয়নমূলক সংগঠনের সভাপতি তাসনিমুল হাসান প্রান্ত বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণে খোলা জায়গা ও জলাধার কমে যাওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পানির এ সংকট দেখা দিয়েছে, যা আমাদের জন্য অশনি সংকেত। এখনই সচেতন না হলে আগামীতে সমস্যা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে।সাধারণত মণিরামপুর পৌরসভা এলাকায় পানির স্তর ২৫ ফুটের নিচে নামলে হস্তচালিত নলকূপ থেকে পানি ওঠে না। যদি তা ২৬ থেকে ২৮ ফুটের নিচে নেমে যায়, তাহলে বাসাবাড়িতে মোটর দিয়ে পানি তোলাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। অথচ এই মুহূর্তে মণিরামপুর পৌর এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রয়েছে ২৮ থেকে ৩০ ফুট নিচে।মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্ত জানান, মনিরামপুর পৌরসভার ভূগর্বস্থ পানির স্তর স্থল ভাগ থেকে স্বাভাবিক সময় ২৫ ফুটের মধ্যে পানি পাওয়া যায়, কিন্তু সম্প্রতি অতিরিক্ত তাপদাহে পানির স্থর নেমে গেছে ২৮ থেকে ৩০ ফুটে নিচে, যার কারণে অনেক নলকূপে পানি উঠেছে না।