• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০১:৩৫:৫৬ (26-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০১:৩৫:৫৬ (26-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

সেন্টমার্টিনে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে মিলছে নিত্যপণ্য

২০ জানুয়ারী ২০২৩ বিকাল ০৫:০৮:১৩

সেন্টমার্টিনে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে মিলছে নিত্যপণ্য

মিজানুর রহমান, কক্সবাজার : কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে টাকার চেয়ে এখন প্লাস্টিকের দাম বেশি, অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি। এখন সেন্টমার্টিনে স্থানীয়রা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জমা দিলেই বিদ্যানন্দের স্টলে পাচ্ছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। গতবছরের ডিসেম্বর মাস থেকে এই সুবিধা দিয়ে আসছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এই কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগীতা ও নির্দেশনা দিয়ে আসছে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার।

মূলত সেন্টমারটিনের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র ও পরিবেশকে প্লাস্টিক দূষণের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে একদল স্বেচ্ছাসেবক সেন্টমারটিনের বিভিন্ন পাড়ায় গিয়ে উঠোন বৈঠক, মাইকিং ও পোস্টারিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করে এবং বলে যে, এখন থেকে প্লাস্টিক কুড়িয়ে জমা দিলেই পাওয়া যাবে নিত্যপণ্য।  

স্বেচ্ছাসেবকরা স্থানীয়দের নিয়ে টিম করে একযোগে বিচ পরিষ্কার কর্মসূচিও পালন করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোরের সামনে বিশাল লাইন। প্রত্যেকের হাতে প্লাস্টিকের বস্তা! লাইনের অধিকাংশ মানুষ নারী।

মাঝেরপাড়া থেকে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, আমি ১০ কেজি প্লাস্টিক কুড়িয়ে নিয়ে এসেছি, এটার বিনিময়ে প্রায় ৬/৭শ টাকার বাজার করতে পেরেছি। আজ অনেকদিন পর বাচ্চাদের মুরগীর মাংশ দিয়ে ভাত খাওয়াতে পারব!

পশ্চিম পাড়া থেকে আসা আছিয়া বিবি বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর অসহায় দিন পার করছিলাম। এখন আমি প্রতিদিন সাগরপাড়ে গিয়ে প্লাস্টিক কুড়াই এই স্টোরের বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করবো।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য মো: জামাল উদ্দিন বলেন, সমুদ্রকে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে রক্ষার জন্য টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। সংগৃহীত প্লাস্টিক দ্বীপ থেকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে রিসাইকেল করা হয়। সংগৃহীত প্লাস্টিকের একটি অংশ দিয়ে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবীরা কক্সবাজারে তৈরি করেছেন বিশাল আকৃতির একটি ‘প্লাস্টিক দানব’। ধারণা করা হচ্ছে, এই দানব এশিয়ার সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে বড় স্ট্যাচু। এই দানব তৈরির মাধ্যমেই বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন মানব সমাজকে একটি বার্তা দিতে চায় যে, প্লাস্টিকের ফলে পরিবেশ যেই হারে দূষিত হচ্ছে তা ধীরে ধীরে দানবে রূপ নিচ্ছে। আর এই দানবই পরবর্তীতে মানবসমাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবু সুফিয়ান বলেন, সেন্টমারটিন সহ অন্যান্য দ্বীপ ও সমুদ্রসৈকত কে দূষনমুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসন নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও মানুষের অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে সেটি পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সাধারন মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে ও তাদের সম্পৃক্ত করে যে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে তাতে সর্বাত্মক সহযোগীতা করেছে জেলা প্রশাসন।  আশা করছি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা হবে।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একটি শিক্ষা অনুকূল বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অনাথ ও বঞ্চিত শিশুদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য বিদ্যানন্দ এক টাকায় আহার, শীতকালীন ও ঈদে নতুন কাপড় বিতরণ, বিনামূল্যে শিক্ষা কর্মসূচি এবং এক টাকায় চিকিৎসাসহ বেশ কয়েকটি নিয়মিত কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বিনামূল্যে পড়ানোর পাশাপাশি দেওয়া হয় শিক্ষা উপকরণ। এর বাইরেও সংস্থাটি প্রতিনিয়ত সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়ে থাকে।

এসব কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরুপ সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে ‘জাতীয় মানবকল্যাণ পদক ২০২২’ প্রদান করে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ