সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় এক টিকটকার তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর নগ্ন ভিডিও ধারণের অভিযোগে ৬ যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
৩ জানুয়ারি শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের বাবলাতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় আটক হওয়া যুবকদের মোবাইলে ধারণ করা নগ্ন ভিডিও জব্দ করা হয়। ভুক্তভোগী ওই তরুণীও পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৩১ ডিসেম্বর বাবলাতলা গ্রামের স্থানীয় আকরাম খাঁন নামের এক টিকটকার ও ভিডিও ক্রিয়েটর ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে (২০) একটি নতুন টিকটক ভিডিও তৈরির জন্য বোয়ালমারী উপজেলা থেকে ভাঙ্গায় ডেকে আনে। ওই রাতে উপজেলার ঘারুয়া গ্রামে জনৈক এক বাড়ির মালিকের বসতঘরে আটকে রেখে ওই তরুণীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম দফায় ধর্ষণ করে আকরাম হোসেন। এ সময় আকরামের সহযোগী ছিলেন মধুখালী উপজেলার জুয়েল মোল্লা ও অজ্ঞাত আরও এক যুবক।
এরপর সেখান থেকে ওই তরুণীকে নিয়ে আকরাম ও তার দুই সহযোগীসহ ৩ জানুয়ারি উপজেলার বাবলাতলা বাজার সংলগ্ন একটি ভাড়াবাসায় ওঠে। সেই বাড়ির মালিককে ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয় আকরাম। স্থানীয়দের সন্দেহ হলে চুমুরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনারুদ্দিন ও তার ছেলে ছাইদুল মোল্লাসহ তাদের আরও ৫ থেকে ৭ সহযোগী আকরামসহ ওই তরুণীকে বসতঘরে আটকে রাখে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানায়, এরপর রাত সাড়ে ১২টার পর থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ইউপি সদস্যের ছেলে ছাইদুলসহ তার সহযোগী পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক ওই তরুণী ও আকরামকে বেধড়ক মারধর করে। বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গিতে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। একপর্যায়ে, ওই তরুণীর অশ্লীল ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন ইউপি সদস্যের ছেলে ও তার সহযোগীরা। পরবর্তীতে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু টাকাও দেয় আকরাম ও তার সহযোগীরা। এরপর ভিডিওর ভয় দেখিয়ে আরও মোটা অংকের অর্থ দাবি করে সেখান থেকে চলে যায় ছাইদুল ও তার সহযোগীরা।
পুলিশ আরও জানায়, ওই রাতেই তরুণীকে দুই দফায় ধর্ষণ করে আকরাম ও তার সহযোগী জুয়েল মোল্লা। পরর্তীতে এ ঘটনার বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পারলে গভীর রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী ও তরুণীসহ ছয় যুবককে আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে চুমুরদী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনারুদ্দিন মোল্লা জানান, প্রথমে স্থানীয়ভাবে শালিস-দরবারের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। পরে বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত যায়।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ৬ জনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগে দুইটি মামলা ও পর্নগ্রাফি আইনে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available