স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে সাংবাদিকতার আড়ালে দেহ ব্যবসা ও ব্ল্যাকমেইলিং করার অভিযোগে ১ নারীসহ ৩ জনকে গণপিটুনি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।
১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে ভূমি পল্লী আবাসিক এলাকা থেকে তাদের আটক করে পিটুনি দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে তারা আর কখনও সাংবাদিকতা করবে না মর্মে মুচলেকা ও কানধরে উঠবস করে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পায়।
কথিত সাংবাদিক নামধারী ওই তিনজন হলো, গ্লোবাল টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম মনির, সকালের কাগজ পত্রিকার আরিফ খান শুভ ও একটি ভুয়া টেলিভিশনসহ ৪টি গণমাধ্যমের পরিচয়পত্র বহনকারী দিপা আক্তার।
শিক্ষার্থীরা জানায়, দিপা আক্তারের সহায়তায় ভূমি পল্লী আবাসিক এলাকায় দেহব্যবসার আস্তানা গড়ে তুলেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কথিত সাংবাদিক মনিররুল ইসলাম। দেহ ব্যবসার এ আস্তানায় যারা ফুর্তি করতে যায় তাদের ব্ল্যাকমেইলিং করে অর্থ আদায় করে মনির চক্র। তারা হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগায় আমেনা (২০) নামে এক নিশি কন্যাকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঘটনার দিন সন্ধায় সবুজ ও জুয়েল নামে দুই যুবক তাদের আস্তানায় গেলে চোর আখ্যা দিয়ে আটক করে রাখে কথিত সাংবাদিকরা। তারা দুই যুবককে মারধর ও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। বিষয়টি জানতে পেরে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সদস্যরা ছুটে যান সেখানে। তারা গিয়ে ওই ২ যুবককে উদ্ধার ও কথিত ৩ সাংবাদিককে আটক করে গণপিটুনি দেয়।
খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তখন মনিরুল ইসলাম, আরিফ খান শুভ, দিপা আক্তার ও নিশি কন্যা আমেনাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কথিত সাংবাদিক দিপা আক্তার লোকজনকে তাদের আস্তানায় নিয়ে আসে। পরে আমেনার সাথে ফুর্তি করার সময় গোপনে ভিডিও ও ছবি ধারণ করে তাদের ব্ল্যাকমেইলিং করা হয়। তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় লাখ লাখ টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই মনিরুল ইসলাম ভূমি পল্লীতে এভাবে দেহব্যবসা ও ব্ল্যাকমেইলিং করে আসছে।
অভিযোগ রয়েছে, সাজু নামের এক ড্রাইভারকে ব্ল্যাকমেলিং করে ৫০ হাজার টাকা আদায় করেছে তারা। তার ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কিছুদিন পর পর টাকা দাবি করে। তারা এসব অপকর্ম করছে আওয়ামী লীগ আমলের নারায়ণগঞ্জের এক ডিসির গাড়ি চালকের বাড়িতে ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে।
এদিকে, রাতে সোনারগাঁ থানার কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী ও একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের পরিচালক সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গিয়ে শিক্ষার্থী ও থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুর আলমের সাথে কথা বলে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। তবে তারা মুচলেকা ও কানধরে উঠবস করে বলেছে আর সাংবাদিকতা করবে না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলম বলেন, একটি বাসায় অনৈতিক কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগে তিন সাংবাদিককে আটক করে পুলিশে দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। পরে অন্য কয়েকজন সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে আটকদের বিরুদ্ধে কোনো ভিকটিম অভিযোগ করতে রাজি না হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available