পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কোচিং সেন্টারে যৌন হয়রানির অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান (৩২) নামে এক শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ছাত্রজনতা।
১৬ এপ্রিল বুধবার বিকেলে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে এবং ঘটনার আলামত যাচাই-বাছাই করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে ওই শিক্ষককে পঞ্চগড় শহরের মসজিদ পাড়া এলাকায় তার কোচিং সেন্টারে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির সময় হাতেনাতে আটক করে বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে নেয় জনতা।
আটক ওই শিক্ষকের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহাড়ডাঙ্গা এলাকায়। তিনি জেলা শহরের একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক বলে জানা গেছে। তিনি জেলা শহরে একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকায় গণিত বিষয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তার কোচিং সেন্টারের পাঁচ ছাত্রীকে উচ্চতর গণিত বিষয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। প্রাইভেট শেষে চারজন ছাত্রী চলে গেলেও একজন ছাত্রীর সাথে যৌন হয়রানি শুরু করেন তিনি। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন মুঠোফোনে।
পরে তারা তাকে আটক করে বিচারের দাবিতে ইজিবাইকে করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে নিয়ে যান। সেখানে ঘটনা জানতে পেরে উত্তেজিত জনতা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সদর থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসেন।
এর আগেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রত্যক্ষদর্শী আসিফ আহমেদ বলেন, শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তার কোচিং সেন্টারে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন বলে আমরা কিছু অভিযোগ পাই কয়েকজন ছাত্রীর কাছে। পরে আমরা বুধবার দুপুরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাকে আটক করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে যাই।
মোকাদ্দসুর রহমান সান বলেন, বুধবার দুপুরে এক শিক্ষককে যৌন হয়রানির অভিযোগে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। আমরা এই শিক্ষককে আর পঞ্চগড়ে দেখতে চাই না। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পূর্বে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এবার তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচএসএম সোহরাওয়ার্দী বলেন, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষককে আটক করে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা ঘটনার আলামত, ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available