পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি: উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের সবচেয়ে বড় সারকারখানা ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প। আগামী ১২ নভেম্বর এশিয়ার বৃহত্তম নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারকারখানা প্রকল্পের পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক জানান, ১২ নভেম্বর রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী সারকারখানাটি উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের ইউরিয়া সারের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি সুলভমূল্যে কৃষকদের কাছে সার পৌঁছে দিতে ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে শিল্প মন্ত্রণালয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন ।
পরিবেশবান্ধব এ কারখানাটিতে দৈনিক ২ হাজার ৮০০ টন হিসাবে বার্ষিক ১০ লাখ ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে, যা দেশে সার উৎপাদনে এক নবদিগন্ত সূচনা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর ১ টন সার উৎপাদনের জন্য সর্বোচ্চ ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস খরচ হবে। সেদিক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ টন সার উৎপাদনের জন্য তিতাস গ্যাসকে প্রায় ৭০ হাজার এমসিএফ গ্যাস সরবরাহ করতে হবে।
চার বছর মেয়াদি এ জিপি প্রজেক্টের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর নরসিংদীর পলাশে প্রতিষ্ঠিত দুটি সার কারখানায় উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় দেশে সারের চাহিদা পূরণে দুটি সার কারখানাকে ভেঙে একটি অত্যাধুনিক কারখানা করার পরিকল্পনা করে সরকার।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে মার্চে শুরু হয় ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় জাপান ও চিনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর দিন রাত পরিশ্রম করে নির্ধারিত সময়ের দুমাস আগেই নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে গত ১৪ অক্টোবর পরীক্ষামূলক সার উৎপাদন শুরু করে কারখানাটি।
কারখানাটি চালুর পর দেশের কৃষি উৎপাদন, কৃষি অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঘোড়াশাল পলাশ সারকারখানা প্রকল্পের পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক আরও জানান, আমরা কোভিডের মধ্যেওে কাজ করেছি। তাই প্রকল্প কাজের নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই শেষ করে অক্টোবরে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা মূলক সার উৎপাদন করতে পেরেছি। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ১০ মার্চ। শেষ হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, সার কারখানাটি নির্মাণে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। দেশি এবং বিদেশি মিলিয়ে এক সঙ্গে প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক কাজ করেছে। বর্তমানে সরকারকে ইউরিয়া সার আমদানিতে প্রতি বছর ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। এ ঘোড়াশাল-পলাশ সারকারখানাটি উৎপাদনে এলে আর তা দিতে হবে না।
বাংলাদেশে বছরে ২৫ লাখ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হলেও এটি উৎপাদনে এলে ২০ লাখ টন পাওয়া যাবে। আর বাকি ৫ লাখ টন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের উদ্বোধন ছাড়াও সারকারখানার ভিতরে ঘোড়াশালে একটি সুধী সমাবেশ ও দুপুর নাগাদ নরসিংদী মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে একটি জনসভা করবেন বলে জানা গেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available