নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার রায় আজ ঘোষণা করার কথা রয়েছে। আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্কসহ চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। এতে শ্রমিক অংশগ্রহণ ও কল্যাণ তহবিল গঠন এবং নিট মুনাফার ৫ শতাংশ তহবিলে না দেয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ না দেয়া, চাকরি স্থায়ী না করাসহ শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
শুনানিতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী। অন্যদিকে মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবীরা বলছেন, মামলায় আনা অভিযোগ প্রমাণে বাদীপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। তাই ড. ইউনূসরা বেকসুর খালাস পাবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, ‘শ্রম আইন ভঙ্গের অভিযোগে মামলাটা করা হয়েছে। সে মামলায় বাদীপক্ষে চারজন সাক্ষী দিয়েছে এবং এ-সংশ্লিষ্ট দলিল-দস্তাবেজ দাখিল করেছি। অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ নথিও জব্দ করা হয়েছে। শুরুতে উনাকে (ড. ইউনূস) শোকজ করা হয়েছিল।
আইন লঙ্ঘনগুলোর ব্যাপারে রিমাইন্ডার দেয়া হয়েছিল। উনি তখন রিপ্লাই দিয়ে স্বীকার করেছেন যে তাদের ভায়োলেশন আছে, তারা সেগুলো শুধরে নেবেন। পরবর্তী সময়ে যখন শুধরালেন না; আমরা আবার উনাকে দ্বিতীয়বার শোকজ দিলাম। এ শোকজেরও একই ধরনের রিপ্লাই আসে। উনারা এটিকে আমলে নিলেন না। তাই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর তার আইনি ক্ষমতাবলে মামলাটি দায়ের করেছে।’
এ মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হলে কী শাস্তি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শ্রম আইন ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ছয় মাস এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা। এছাড়া শ্রম আইনে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।’
অন্যদিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে যে চারটি ধারায় মামলা করা হয়েছে সেগুলো সঠিক নয় বলে দাবি করেন ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি। এছাড়া শ্রম আদালতের আইনের ধারায় বলা আছে, কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলে তারপর আসবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কলকারখানার সঙ্গে ড. ইউনূসের নয়, কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। সুতরাং আইনের ধারা অনুযায়ী মামলা করতে হবে কোম্পানির বিরুদ্ধে, ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। ড. ইউনূস তো সক্রিয়ভাবে এর সঙ্গে জড়িত না। এছাড়া যিনি ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাকে আসামি করা হয়নি। মূলত আসামি করা হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার ঘনিষ্ঠ তিনজনকে; যারা কোনোভাবেই জড়িত না।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available