নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ থাকার পাঁচ দিন পর ২৪ জুলাই বুধবার আসিফ ও বাকেরকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে যাওয়া হয়েছে বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দুজনই জানিয়েছেন। আর রিফাত আত্মগোপনে আছেন।
এই তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। আসিফ মাহমুদকে রাজধানীর হাতিরঝিল ও আবু বাকেরকে ধানমন্ডি এলাকায় ফেলে যাওয়া হয় বলে তাঁরা জানান। তাঁদের কে বা কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল, ফেসবুক পোস্টে তা স্পষ্ট করা হয়নি। আর রিফাত ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গুম হতে হতে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলাম।’
আসিফ মাহমুদ বিকেলে ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গত ১৯ জুলাই রাত ১১টায় আমাকে হাতিরঝিলের মহানগর আবাসিক এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায়। আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিতে চাপ দেওয়া হয়। না মানায় ইনজেকশন দিয়ে সেন্সলেস (অচেতন) করে রাখা হয়। এই চার-পাঁচ দিনে যতবার জ্ঞান ফিরেছে, ততবার ইনজেকশন দিয়ে সেন্সলেস করে রাখা হয়। আজ বুধবার বেলা ১১টায় আবার একই জায়গায় চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে দিয়ে যায়।’
আসিফ আরও লিখেছেন, ‘এখন আমি পরিবারের সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসারত আছি। এই কয় দিনে যা ঘটেছে, তা জানার চেষ্টা করছি। কিছুটা সুস্থ হলেই সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনের বিষয়ে বিস্তারিত বলব।’
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ফেসবুক পোস্টে বাকের লিখেছেন, ‘আমাকে ১৯ জুলাই সন্ধ্যার পর ধানমন্ডি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং আন্দোলন বন্ধে স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দিতে বলায় আমি অস্বীকৃতি জানালে একটা অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখে। যে এলাকা থেকে তুলে নেয়, তার পাশের এলাকায় আমাকে চোখ বেঁধে ফেলে যায়। আমি এখন আমার পরিবারের সাথে নিরাপদে আছি। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আপনাদের সামনে সবিস্তারে সব বলব।’
সোয়া সাতটার দিকে রিফাত রশীদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি বেঁচে আছি, মরি নাই। আমি গুম হতে হতে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলাম। সমন্বয়কদের সিদ্ধান্ত মেনেই আমি নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়েছিলাম। তারপর এই সাপ-লুডুর জীবন। আজ এর বাড়ি তো কাল ওর বাড়ি। এর মধ্যে যতবার ফোন কানেক্ট করার চেষ্টা করেছি, ততবারই ফোন ট্র্যাকিংয়ের শিকার হয়েছি। জানি না, কতক্ষণ নিরাপদে থাকব।’
আসিফ ও বাকেরের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষার্থী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। রিফাত রশীদের বাবা দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ছেলের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়েছে।
এর আগে ২৩ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে আসিফ মাহমুদের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন বলেছিলেন, ‘পত্রিকায় আসিফের গুমের খবর দেখে কুমিল্লার মুরাদনগর থেকে ঢাকায় এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে তালাশ করেছি। তাকে পাই নাই। এখন আমার একটাই আবদার, আসিফের সন্ধান চাই।’ আন্দোলনের অন্য সমন্বয়কেরাও আসিফের সন্ধান দাবি করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available