নিজস্ব প্রতিবেদক: নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার। তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
একদল ব্যক্তি সাদাপোশাকে ২৬ জুলাই শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ধানমন্ডির ওই হাসপাতাল থেকে তাদের তুলে নিয়ে যান। সে সময় ওই ব্যক্তিরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেন। সেখানে উপস্থিত এক সমন্বয়কের স্বজন ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এ তথ্য জানান।
পরে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি প্রধান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্য পরিচয় দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন ছাত্রকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এই তিনজনকে এর আগেও একবার তুলে নেওয়া হয়েছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ে সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ার পর ১৯ জুলাই মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া থেকে নাহিদকে তুলে নেওয়া হয়। ২১ জুলাই ভোরে পূর্বাচল এলাকায় তাকে ফেলে যাওয়া হয়। নাহিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল আঘাতের চিহ্ন। এর পর থেকে তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অপর দুই সমন্বয়ক আসিফ ও বাকেরকেও ১৯ জুলাই তুলে নেওয়া হয়েছিল। পাঁচ দিন পর ২৪ জুলাই আসিফকে হাতিরঝিল ও বাকেরকে ধানমন্ডি এলাকায় ফেলে যাওয়া হয়। এর পর থেকে আসিফও গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালে তার সঙ্গে থাকছিলেন বাকের।
শুক্রবার তিনজনকে তুলে নেওয়ার খবর জানাজানি হলে গণমাধ্যমকর্মীরা বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে যান। নাহিদ হাসপাতালের ৭০৩ নম্বর কক্ষে এবং আসিফ ৩১১ নম্বর কক্ষে ভর্তি ছিলেন। নাহিদের সঙ্গে তার স্ত্রী আর আসিফের সঙ্গে বাকের ছিলেন।
হাসপাতালে উপস্থিত নাহিদের স্বজনেরা জানান, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে একদল লোক এসে প্রথমে নাহিদকে তুলে নিয়ে যান। পরে আসিফ ও বাকেরকে নিয়ে যান।
নাহিদকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সঙ্গে থাকাতাঁদের স্বজন ফাতিমা তাসনীম বলেন, বিকেলে তিনি নাহিদের কক্ষেই ছিলেন। হাসপাতালের যে ছেলেটি খাবার দিত, তাকে আটক করা হয়েছে, এমন খবর শুনে তিনি নাহিদের কক্ষ থেকে আসিফের কক্ষে যান। তখন চারজন ব্যক্তি আসিফ ও বাকেরকে ধমকাচ্ছিলেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available