নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর রামপুরা মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় ঘরে ঢুকে মারধর করে তানজিল জাহান ইসলাম তামিম (৩২) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
নিহত যুবক বেসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম দীপ্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার কর্মকর্তা। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে এক প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করেছে রামপুরা থানা পুলিশ।
পরিবারের অভিযোগ, নিজেদের জমিতে নির্মিত অ্যাপার্টমেন্টে ফ্ল্যাট পাওয়া নিয়ে ডেভলপার কোম্পানির সঙ্গে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালের দিকে রামপুরার মহানগর প্রজেক্টের চার নম্বর রোডের ডি-ব্লকের একটি বাড়ির আট তলার একটি ফ্ল্যাটে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই লোকজন তামিমকে উদ্ধার করে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষার পর মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত তামিমের পরিবারের দাবি, প্লিজেন্ট প্রোপার্টিস নামে ওই কোম্পানির কর্ণধার শেখ রবিউল আলম রবির নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
তামিমের মামা মাসুদ করিম জানান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন তামিম। যোগ দেন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগে। মহানগর প্রজেক্টের বাড়িটির ৭ তলায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন তিনি ও তার পরিবার। প্লিজেন্ট প্রোপ্রার্টিজ লিমিটেড ডেভলপার কোম্পানি তাদের মোট পাঁচটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তামিমরা যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেটি বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে বছর খানেক আগে একটি মামলাও করা হয়।
মাসুদ করিম বলেন, বুধবার ডেভলপার কোম্পানির সঙ্গে তামিমদের একটি সমঝোতা হয়। আট তলায় দুটি ফ্ল্যাট তাদের দেওয়ার কথা জানানো হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে আট তলার ফ্ল্যাটে লেবার দিয়ে কিছু কাজ করানোর সময় ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ মির্জা, তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা চালায়। তামিমকে মারধর করতে থাকে তারা। চিৎকার শুনে তামিমের বড় ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে এলে তাকেও মারধর করে এক পর্যায়ে চলে যায় তারা। তখন জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চান ভুক্তভোগীরা। অসুস্থ অবস্থায় তামিমকে মনোয়ারা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাতিরঝিল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়িটির জমির মালিক তামিমের বাবাসহ মোট তিনজন। তাদের সঙ্গে ডেভলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই বাড়িতে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিস নামে ডেভলপার কোম্পানির লোকজন ঢোকেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাদের সঙ্গে বহিরাগত কয়েকজন ছিল। বাগবিতণ্ডা ও তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে কিল-ঘুষি ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করা হয় তামিমের।
তামিম অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের কয়েকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মৃত্যু হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্লিজেন্ট প্রোপার্টিসের প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available