নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ওয়াশ সিস্টেম ফর হেলথ’ প্রকল্পের সূচনা কর্মশালা আয়োজন করেছে উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটার এইড। ২৬ অক্টোবর শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ডিপিএইচই) ইঞ্জিনিয়ার তুষার মোহন সাধু খান। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মো. খায়রুল ইসলাম, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মিসেস হাসিন জাহান, ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকা-এর হেলথ পোর্টফোলিও লিড রশিদ জামান, পলিসি সাপোর্ট ব্রাঞ্চ-এর ডেপুটি সেক্রেটারি সুই মিন জাও, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিল অফিসের মহাপরিচালক (ইন-চার্জ) ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) অধীনস্থ হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট-এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটো। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পৌরসভা, বেশ কয়েকটি আই/এনজিও, বেসরকারি খাত থেকে আগত ব্যক্তিবর্গ এবং কনসোর্টিয়াম অর্গানাইজেশন, এসএনভি বাংলাদেশের কর্মকর্তাগণ।
ওয়াটারএইড-এসএনভি কনসোর্টিয়ামের নেতৃত্বে এবং ইউকে সরকারের অধীনে ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পটির লক্ষ্য হল বাংলাদেশে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রেক্ষাপট-ভিত্তিক ওয়াশ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সেক্টর ব্লকেজ মোকাবেলা। যার মধ্যে রয়েছে সরকারের পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, কমিউনিটির সম্পৃক্ততা, নারী নেতৃত্বকে উৎসাহিত করা, গ্রামাঞ্চলে পানি সরবরাহ ও শহরে স্যানিটেশনের জন্য নমনীয় অবকাঠামো ও পেশাদার পরিষেবা মডেলগুলির বিকাশ এবং জাতীয় নীতিমালাসমূহকে প্রভাবিত করার জন্য প্রকল্প শিক্ষার ব্যবহার।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ডিপিএইচই) ইঞ্জিনিয়ার তুষার মোহন সাধু খান বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। প্রকল্প এলাকার চ্যালেঞ্জগুলি বেশ জটিল এবং আমি আশা করি যে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ওয়াশ সিস্টেমগুলির মধ্যেকার ব্যবধানগুলি ঘোচানোর জন্য একটি সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে পেতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে৷ সেজন্য আমাদের তৈরিকৃত অবকাঠামোর টেকসইতার উপর গুরুত্ব দেয়া এবং মানুষের মধ্যে আচরণ পরিবর্তনের জন্য কাজ করা জরুরি।’
ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ওয়াশ সিস্টেমগুলিকে একে অপরের সাথে একীভূত করতে হবে, সুষমভাবে সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে এবং উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য ক্লিনিক, কমপ্লেক্স এবং হাসপাতাল থেকে নিরাপদ ওয়াশ পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকা-এর হেলথ পোর্টফোলিও লিড জনাব রশিদ জামান বলেন, ‘আমরা যদিও কোভিড-১৯-এর সময় উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যগত অগ্রগতি অর্জন করেছি, আমাদের অবশ্যই আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং স্বাস্থ্য ও ওয়াশের ফলাফলে স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সাম্প্রতিক অভূতপূর্ব বন্যা সংকট আবারও ওয়াশ-এর গুরুত্বকে তুলে ধরেছে, এবং এইভাবে আমাদের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেবার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার অত্যন্ত জরুরি।’
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) অধীনস্থ হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট-এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটো বলেন, “নিরাপদভাবে পরিচালিত স্যানিটেশন মানে শুধু ভালো টয়লেট নয়; এছাড়াও এটি সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও বিষয়। আমাদের অবশ্যই জনগণকে বুঝতে সাহায্য করতে হবে যে ডায়রিয়াজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে এবং স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশ গঠনে স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য নিরাপদ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে ব্যাপক ওয়াশ নীতি বিদ্যমান। তবুও, স্থানীয় সরকারগুলি উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। যেমন সম্পদের ঘাটতি, অপর্যাপ্ত ক্ষমতা, নারী নেতৃত্বের অভাব এবং অকার্যকর পরিষেবা সরবরাহের মডেল। মৌলিক পরিষেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, নিরাপদে পরিচালিত ওয়াশের দিকে যাত্রা উদ্বেগজনকভাবে ধীর। শুধুমাত্র ৬১% ক্ষেত্রে নিরাপদ পানির এবং ২০% ক্ষেত্রে নিরাপদ স্যানিটেশনের সুযোগ বিদ্যমান।
‘ওয়াশ সিস্টেম ফর হেলথ’ প্রকল্পের লক্ষ্য হবে– পাইকগাছা এবং লালমনিরহাট, এই দুটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবাগুলির উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করা এবং যার মাধ্যমে ওয়াশ সম্পর্কিত রোগে মা ও শিশুদের প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুহার হ্রাস করা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available