• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১১:১০:৪২ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১১:১০:৪২ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

প্রিয় ঢাকা

ইসকন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি; নিষিদ্ধের দাবি স্টুডেন্টস ফর ইনসাফের

২৩ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:২১:১৪

ইসকন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি; নিষিদ্ধের দাবি স্টুডেন্টস ফর ইনসাফের

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন হুমকিস্বরূপ, তাই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে স্টুডেন্টস ফর ইনসাফ। ২৩ নভেম্বর শনিবার রাজধানীর খিলগাঁও জোরপুকুর মাঠ সংলগ্ন সড়কে এক সমাবেশে তারা এই দাবি জানায়।

স্টুডেন্টস ফর ইনসাফের আহ্বায়ক সাজিদ আব্দুল্লাহ বলেন, ইসকন অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী। আর অখণ্ড ভারত বাংলাদেশের পৃথক অস্তিত্ব স্বীকার করে না, নিজের অংশ বলে দাবি করে। অখণ্ড ভারত এমন একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী কল্পনা, যার মধ্যে হিন্দু ছাড়া কোন ধর্মের মানুষের অস্তিত্ব নেই। এই অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ইসকন প্রতিনিয়ত মুসলিম বিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত। 

তিনি বলেন, ইসকনের ভাবগুরু হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী চৈতন্য। যার মূল স্লোগান ছিল- ‘নির্যবন করো আজি সকল ভুবন’ অর্থাৎ মুসলিমমুক্ত পৃথিবী গড়ো। এরূপ বিশ্বাস ও উগ্রবাদী কার্যক্রম দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এমন উগ্র, সন্ত্রাসী ও দেশবিরোধী সংগঠন কিছুতেই এদেশে থাকতে পারবে না, অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ করে তার সকল নেতা-কর্মী ও সদস্যকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

স্টুডেন্টস ফর ইনসাফের যুগ্ম আহ্বায়ক রাফিদ মুহম্মদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কর্তৃক নারিকেল দ্বীপ জিঞ্জিরাতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞাকেও আমরা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করছি। কারণ নারিকেল দ্বীপ জিঞ্জিরাতে নিষেধাজ্ঞা দিলে সেখানে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দ্বীপটি জনশূন্য হয়ে পড়বে। এতে পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারের মগদস্যুরা সেখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সুযোগ পাবে। এছাড়া দ্বীপটিকে ঘিরে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদীদের নৌ-ঘাটি করার খায়েশ বহুদিনের। আমরা তাদের সেই সুযোগ করে দিতে পারি না। তাই অবিলম্বে নারিকেল দ্বীপ জিঞ্জিরা ভ্রমণে সর্বপ্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।

এছাড়াও সমাবেশে স্টুডেন্টস ফর ইনসাফের প্রতিনিধিগণ দেশ ও জাতির কল্যাণে মোট ১৭টি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো-

১. হযরত রসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে কোন কুলাঙ্গার মানহানী করলে তার শরঈ শাস্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।  

২. পাঠ্যক্রমে মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র জীবনী অন্তর্ভূক্তকরণ এবং দ্বীন ইসলাম নির্ভর শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে। আরবী ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৩. রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সাথে সাংঘর্ষিক। তাই সংবিধানে জাতীয় সংগীতের অংশ হতে গানটিকে বাদ দিতে হবে।  এবং তার বদলে মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আম্মাজান হযরত উম্মু রসুলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাত শরীফকে জাতীয় নাত শরীফ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।  

৪. পবিত্র কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন কুফরি আইন পাশ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন-১৯৭৩ সংশোধনের খসড়ায় সমকামিতার বিরুদ্ধাচারণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করায়, খসড়াটি বাতিল করতে হবে। কোন আইন বা সংবিধানের ধারা সংস্কার করতে হলে অবশ্যই তা পবিত্র কুরআন-সুন্নাহের ভিত্তিতেই করতে হবে, এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। তবে অবশ্যই হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আদলে দেশ পরিচালনা করতে হবে। যা করলে সর্বোত্তমভাবে দেশ পরিচালিত হবে।

৫. বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কোন অফিস স্থাপন করা যাবে না।

৬. দ্রব্যমূল্য ও চিকিৎসা সেবার উর্ধ্বগতি হ্রাস করতে হবে।

৭. পাহাড়ে উপজাতিদের আদিবাসী বলা যাবে না।  তাদেরকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলতে হবে।  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা পৃথক রাষ্ট্র গঠনের ষড়যন্ত্র করছে, তাদেরকে দমন করতে হবে। পাহাড়ে কথিত রাজার শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। সারা দেশে একই আইনে শাসন চলবে, পার্বত্য এলাকায় ভিন্ন আইন চলবে না।

৮. নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ ভ্রমণে সর্বপ্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। সারা দেশে যেভাবে মানুষ প্রয়োজন মাফিক ভ্রমণ করতে পারে, নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপেও একইভাবে সারাবছর ভ্রমণ করতে পারবে। পরিবেশ দূষণের অজুহাতে যদি নারিকেল জিঞ্জিরা খালি করতে হয়, তবে সর্ব প্রথম রাজধানী ঢাকাকে খালী করতে হবে, কারণ রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর।  যে সমস্ত এনজিও (যেমন- বেলা, পবা ইত্যাদি) পরিবেশের নাম দিয়ে মানুষের রুটি-রুজি বন্ধ করতে চায়, মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে চায়, তারা বিদেশিদের দালাল, তাদেরকে নিষিদ্ধ করে, গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।  বর্তমান পরিবেশ উপদেষ্টার বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় বিরোধিতা করেছিলো।  এখন তার মেয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা হয়ে পরিবেশবাদের বাংলাদেশের অর্থনীতি ও গণমানুষের বিরোধিতা করছে।  তাকেও বরখাস্ত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

৯. হিন্দুত্ববাদ ও ভারতসহ বিদেশি রাষ্ট্র তোষণ বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিন, ভারতসহ পৃথিবীর যে প্রান্তেই মুসলিম নির্যাতন হবে সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে।  হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষে আমেরিকার ট্রাম্প যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে। পাশাপাশি  উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এই সংগঠনসমূহের সকল সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।

১০. জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধের টিকার নামে মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব তৈরি করা যাবে না।  টিকা দিয়ে যে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়েছে বা মারা গেছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দেখা যাচ্ছে, এ টিকা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও কিছু বিদেশি দালালরা মিথ্যা গুজব রটনা করছে।  তাদের এ মিথ্যা রটনার জন্য তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। জনসংখ্যা জনসম্পদ এবং জনশক্তি। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের যাবতীয় পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।

১১. বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দিতে হবে। অবৈধ সংযোগগুলোকে বৈধভাবে সংযুক্ত করলে রাষ্ট্রীয় আয়ও বাড়বে।

১২. পলিথিন নিষিদ্ধ নয় রিসাইক্লিং পদ্ধতি চালু করতে হবে। পলিথিন ব্যবসার সাথে জড়িত কোটি কোটি মানুষের আর্থিক ক্ষতি করা চলবে না।

১৩. নদী ও সাগরে মাছধরার উপর কোন রূপ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জেলেদের রুটি-রুজির উপর আঘাত দেয়া চলবে না। সারা বছর মাছ ধরতে দিতে হবে।

১৪. ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করতে হবে। দেশের প্রয়োজনীয় বালি-পাথর দেশের উৎস থেকেই উত্তোলন করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশের পাথর ও বালি উত্তোলনে কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া যাবে না। সর্ব প্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। এই কাজে জড়িত কোটি কোটি বেকার লোককে কর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে।

১৫. দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভর করা হচ্ছে। চাল, পেঁয়াজ, ডিমসহ সবকিছু বিদেশ থেকে আমদানি করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা হচ্ছে। এগুলো টাকা পাচার করার উপলক্ষ্য। অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভর করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

১৬. সারা দেশের বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। অবিলম্বে দেশের সকল বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করতে হবে।

১৭. মুসলমানদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না। সবাই নিজেদের অধিকারের কথা বলতে পারলে মুসলমানরা কেন বলতে পারবে না? মুসলমানদেরকেও নিজেদের অধিকারের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। কিছুতেই মুসলমানদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না।

সমাবেশে স্টুডেন্টস ফর ইনসাফের দুই শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ