নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরতে যাওয়ার রীতি অনেক পুরোনো। এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরেও ভাটা পড়েনি সেই রীতিতে। এরই অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় মানুষের ঢল নেমেছে।
৩১ মার্চ সোমবার সরেজমিনে মিরপুর চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ ঘুরতে এসেছেন। শহরের যান্ত্রিকতা পাশে রেখে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতেই চিড়িয়াখানায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
দুপুরের পর থেকেই মিরপুর-১ সনি সিনেমা হল থেকে রায়েনখোলা মোড় হয়ে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট লক্ষ করা গেছে। এ অবস্থায় অনেকেই বিসিআইসি কলেজের সামনে থেকেই হেঁটে চিড়িয়াখানা যাচ্ছেন।
আলিফ, আরিফ যমজ ভাই। বাবার সঙ্গে চিড়িয়াখানা দেখতে এসেছেন। আরিফ বলেন, বাবা নিয়ে এসেছেন চিড়িয়াখানা দেখতে। হাতি, জিরাফ, গন্ডার, সিংহ দেখেছি।
তাদের বাবা বলেন, ঢাকায় খোলামেলা জায়গা বলতে এই চিড়িয়াখানাই ভরসা। তবে আসার সময় অনেক যানজট পোহাতে হয়েছে। ব্যবস্থাপনা আরেকটু ভালো হতে পারতো।
মারিয়াম নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, টিকিটের দামটা অনেক বেশি। প্রথম যখন এসেছিলাম তখন ১২ টাকা ছিল, এখন ৫০ টাকা। এটা একটু কম হলে ভালো হয়।
লম্বা ছুটির কথা মাথায় রেখে এবার দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
ঈদ উপলক্ষে পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ হয়েছে। গাছের গোড়ায় দেওয়া হয়েছে রঙ, বসানো হয়েছে নতুন দিকনির্দেশক ও সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমাদের অনুমান ছিল ৯০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষ আজ চিড়িয়াখানায় আসবে। তবে সকালের দিকে দর্শনার্থী একটু কম এসেছে। আশা করছি বিকেলে জনসমাগম আরও বাড়বে।
যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে চিড়িয়াখানার মূল ফটকের সামনে অনেক হকার বসে। ফলে মানুষে যাতায়াতে অসুবিধা হয়। আমরা ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পুলিশ তৎপর রয়েছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেই প্রত্যাশা করছি।
এবার চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ জেব্রা ও বাঘের শাবক। তিনটি জেব্রা শাবক ও ১১ মাস বয়সী বাঘের শাবক ‘শাপলা’ ও ‘পদ্ম’ দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা।
তবে এবার থাকছে না কোনো পশুর খেলা। গত বছর হাতির খেলা দেখানোর সময় এক কিশোর প্রাণ হারায়। তাই এবার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে হাতির খেলাসহ সব খেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এবার ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন এক লাখ থেকে আড়াই লাখ দর্শনার্থীর সমাগম হতে পারে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। ফলে ভিড় নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগ ও পার্কিং ইজারাদারদের সমন্বয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মূল ফটকের সামনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে লম্বা লাইনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ৫০ টাকার টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা দিনভর উপভোগ করতে পারবেন। তবে নিয়মিত সাপ্তাহিক ছুটির অংশ হিসেবে রোববার চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকবে।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় আসতে রাজধানীর যে কোনো প্রান্ত থেকে মিরপুর-১ নম্বর আসতে হবে। মেট্রোরেলে করে আসতে চাইলে মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনে নেমে সেখান থেকে বাস বা রিকশায় করে যাওয়া যাবে চিড়িয়াখানায়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available