নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে সকল ম্যাটস বন্ধ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। ৪ অক্টোবর বুধবার সকালে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত জারি করা এক অফিস আদেশের মাধ্যমে সরকারি/বেসরকারি সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ম্যাটস শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে আন্দোলনের ৪৯তম দিন ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করে। দিন শেষে রাত ১২টায় তাদের উপর পুলিশি হামলা হয়েছে। এতে সাধারণ ম্যাটস্ শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা রাজীকুল হাসান রিফাত, সিনির সমন্বয়ক আমিরুল ইসলাম বিপ্লবসহ অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ ম্যাটস্ শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ডা. মো. শামীম হোসেন আব্দুল্লাহ।
তবে রাতে পুলিশি হামলা হলেও বুধবার সকাল থেকে আবারও তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষাণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপরই অধিদপ্তর থেকে দেশের সকল ম্যাটস বন্ধ ঘোষণা করে অফিস আদেশ জারি করা হলো।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিস আদেশে বলা হয়, মহাপরিচালকের সম্মতিতে অনিবার্য কারণবশত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আজ (৪ অক্টোবর বুধবার) থেকে সকল সরকারি/বেসরকারি মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) বন্ধ ঘোষণা করা হলো এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকল ছাত্রছাত্রীদের হোস্টেল ত্যাগ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
তবে এরকম নোটিশ বা ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকে থামিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ ম্যাটস্ শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ।
আন্দোলনকারীরা বলেন, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তৈরি করা একটি শিক্ষা পদ্ধতি। এটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত, বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ কর্তৃক পরিচালিত এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) নিবন্ধিত। বর্তমানে ১৭টি সরকারি ও ২০০ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
তারা জানান, ম্যাটস শিক্ষার্থীরা গত ১৬ আগস্ট থেকে চার দফা দাবিতে সারাদেশের সব সরকারি ও বেসরকারি ম্যাটস্ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, ছাত্রধর্মঘট, সরকারি ম্যাটসের প্রশাসনিক ভবনে তালাবদ্ধ কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন প্রসঙ্গে তারা বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ১৫ দিনের মধ্যে দাবি মানার আশ্বাস দেন। তার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত স্থগিত করা হয়। কিন্তু ১৫ দিন চলে গেলেও শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির কোনো সুরাহা হয়নি।
আরও পড়ুন : রাতের আঁধারে আন্দোলনরত ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপর হামলা
তাই আন্দোলনের ৪৯তম দিন থেকে দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে সারাদেশের ম্যাটস শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করে যাবে।
চার দফা দাবিগুলো হলো:
১. বঙ্গবন্ধুর প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া।
২. অনতিবিলম্বে চার বছরের একাডেমিক কোর্স বহাল রেখে আগের মতো ১ বছরের ইন্টার্নশিপসহ অসংগতিপূর্ণ কোর্স কারিকুলাম সংশোধন করা।
৩. এলাইড হেলথ শিক্ষা বোর্ড বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে বোর্ড গঠন করা।
৪.অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃজন করতে হবে (কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে পাস করা ডিএমএফদের পদ সৃষ্টি করে পদায়ন করা)।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available