লালমনিরহাট প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া গ্রামে বিদ্যালয় মাঠে জোরপূর্বক বসানো হচ্ছে হাট-বাজার। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। খেলাধুলার চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি দুই বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানো হবে এমন ইঙ্গিত পেয়ে অভিভাবক সমাজ একটি লিখিত অভিযোগ দেয় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর। কিন্তু সে অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করে হাট বসানো হচ্ছে।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, শিয়ালখোওয়া গ্রামে একই ক্যাম্পাসে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একটি শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অপরটি শিয়ালখোওয়া স্কুল এন্ড কলেজ। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২২৩জন শিক্ষার্থী ও স্কুল এন্ড কলেজে ৬৫০জন শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠটির আয়তন প্রায় তিন একর। দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি রয়েছে তিনটি কেজি স্কুল ও একটি মাদ্রাসা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে এই খেলার মাঠটিতে।
গত ১৬ এপ্রিল বুধবার থেকে হাটের ইজারাদার জোরপূর্বক স্কুলমাঠে হাট বসাচ্ছেন। সপ্তাহে প্রতি শনিবার ও বুধবার হাট এসে। এছাড়া বাকি ৫দিন স্কুল মাঠে বাজার বসে। হাটের দিনে ৫-১০ হাজার মানুষজন তাদের ব্যবসায়ীকসহ সার্বিক কার্যাবলী সম্প্রদান এবং বাজারের দিনে ২-৩ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গেল বছর তারা আন্দোলন করে স্কুলমাঠটিকে হাটমুক্ত করেছিলেন। তারপর থেকে তারা স্কুলমাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করেছেন। তাদের বিদ্যালয়ে ছিলো শিক্ষার পরিবেশ। কিন্তু গত ১৬ এপ্রিল বুধবার থেকে স্কুলমাঠে হাট বসার কারনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাটমুক্ত স্কুলমাঠের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
শিয়ালখোওয়া হাটের ইজাদার আসাদুল হক হিরু গণমাধ্যমকে জানান, হাটের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বহু বছরধরে স্কুলমাঠে হাট বসানো হচ্ছে। শুধু গেল বছর স্কুলমাঠে হাট বসানো হয়নি স্থানীয দ্বন্দের কারনে। স্কুলমাঠে হাট বসানোর দাবি ৯৫ শতাংশ মানুষের। এই হাট স্থানীয় অর্থনীতির সাথে জড়িত। ‘আমি নিয়মনীতি মেনে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে স্কুলমাঠে হাট বসাচ্ছি।
শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাসেম আলী জানান, শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করতে হলে হাটমুক্ত স্কুলমাঠ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে খেলাধুলার চর্চা করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ’আমাদের স্কুলমাঠে হাট বসানো হচ্ছে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। আমাদের দাবির কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিইওি) মুজিবুর রহমান জানান, অনেক স্কুলমাঠ থেকে হাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনো অনেক স্কুলমাঠে হাট বসানো হচ্ছে। যেসব স্কুলমাঠে হাট বসানো হচ্ছে সেখানকার শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। শিয়ালখোওয়া গ্রামে স্কুলমাঠ থেকে হাট অপসারণ করবে উপজেলা প্রশাসন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা জানান, ‘আমরা হাট ইজারা দিয়েছি। স্কুলমাঠ ইজারা দেইনি। হাটের জায়গা সঙ্কটের কারনে ইজারাদার স্কুলমাঠে হাট বসাচ্ছেন। অতীতেও এই স্কুলমাঠে হাট বসেছিলো।’ স্কুলমাঠ থেকে হাট অপসারণ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,’ হাটের ইজারাদার ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দ্রুত।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available