মাহমুদা আক্তার: রাজধানীর বুকে তিতুমীর কলেজ প্রাঙ্গনে শীত যেন প্রকৃতির আঁকা এক জীবনময় চিত্র। কুয়াশার চাদরে মোড়া সকাল, শিশিরের মুক্তোঝলক আর শীতল হাওয়ার মৃদু স্পর্শে জেগে ওঠে এক মায়াবি পরিবেশ। শীত এখানে শুধুই একটি ঋতু নয়, এটি যেন নীরব এক উৎসব।
ভোরের প্রথম আলোয় কুয়াশা ভেদ করে মিলনায়তনের পাশের শিউলিতলায় নেমে আসে সোনালি রোদ। ঘাসের উপর জমে থাকা শিশির, পাখির ডানায় ঝুলে থাকা পানিকণা সবকিছুতেই যেন শীত তার শিল্পীর ছোঁয়ায় আল্পনা আঁকে। শহীদ বরকত মিলনায়তনের সামনে শিউলির মিষ্টি গন্ধ আর শিশির ভেজা পথ ধরে হাঁটলে মনে হয়, যেন সময় থেমে গেছে।
দুপুরের রোদ এসে কুয়াশার পর্দা সরিয়ে যখন প্রকৃতিকে উন্মুক্ত করে, তখন পুষ্পকানন চত্বর ভরে ওঠে প্রাণচাঞ্চল্যে। কেউ গিটারের সুর তুলছে, কেউ বা পিঠার প্লেটে শীতের সুখ খুঁজে নিচ্ছে। হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো লালনের গান কিংবা বন্ধুর আড্ডায় মিশে থাকা স্মিত হাসি সবই যেন এক অদ্ভুত সুরের মেলবন্ধন।
সন্ধ্যার আলো-আঁধারিতে ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে আরও মোহনীয়। প্রধান ফটকের সামনে জমে ওঠে ব্যাডমিন্টন খেলা, আর লালনগীতির মৃদু সুরে ভেসে আসে এক গ্রামীণ সৌন্দর্যের আবহ। শীতের রাতে, তিতুমীর যেন এক রূপকথার রাজ্য, যেখানে প্রকৃতি তার সমস্ত জাদু মেলে ধরে।
এই শীত শুধু প্রকৃতির নয়, এটি ক্যাম্পাসের প্রাণ। আড্ডা, গান, খেলা, আর পিঠা-চায়ের মধ্য দিয়ে তিতুমীর প্রাঙ্গন শীতের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ্য করে রাখে। কুয়াশার চাদর, শিশিরে ভেজা পা আর শীতল বাতাসের মৃদু সুরে লেখা হয়ে যায় এক অনন্য কবিতা, যার প্রতিটি ছত্রে লেখা থাকে ‘শীতের তিতুমীর’।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available