আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে একটি হাসপাতালে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভয়াবহ এই হামলায় নিহত হয়েছেন ৬৭ জন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গত ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার এই হামলার ঘটনা ঘটে।
দেশটির দারফুর অঞ্চলের ওই হাসপাতালে হামলার পর প্রাথমিকভাবে ৩০ জন নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে পৌঁছায়। ২৫ জানুয়ারি শনিবার রাতে পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আল জাজিরা জানায়, শুক্রবারের হামলায় ৬৭ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মী এবং একটি চিকিৎসা সূত্র শনিবার এএফপিকে জানিয়েছে। মূলত সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশারের সর্বশেষ যেকয়েকটি হাসপাতাল কার্যকর রয়েছে তার একটিতেই এই ড্রোন হামলা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আঞ্চলিক গভর্নর মিনি মিনাউই শনিবার তার এক্স অ্যাকাউন্টে রক্তাক্ত মৃতদেহের গ্রাফিক ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, এই হামলায় নারী ও শিশুসহ ৭০ জনেরও বেশি রোগীকে “নিঃশেষ” করা হয়েছে।
সুদানে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে এবং যুদ্ধরত এই দুই পক্ষের মধ্যে ঠিক কোন পক্ষ এই হামলা চালিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। সুদানের আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের সাথে যুদ্ধ করছে দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে দারফুরের প্রায় পুরো বিস্তীর্ণ পশ্চিমাঞ্চল দখল করে নিয়েছে আরএসএফ।
এছাড়া আরএসএফ গত বছরের মে মাস থেকে উত্তর দারফুর প্রদেশের রাজধানী এল-ফাশারও অবরোধ করে রেখেছে, কিন্তু সেনাবাহিনীর সমন্বিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বারবার তার যোদ্ধাদের পিছু হঠতে বাধ্য করেছে এবং শহরটি দখল করতে বাধা দিয়েছে।
এমন অবস্থায় এল-ফাশারে স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর ওপরও আক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসা প্রদানকারী দাতব্য ডাক্তাররা এই মাসে বলেছেন, সেখানকার সৌদি হাসপাতালটি “এখনও পর্যন্ত একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যেখানে অস্ত্রোপচারের সক্ষমতা রয়েছে”।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, সংঘাতের মধ্যে আফ্রিকার এই দেশটিতে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো তাদের পরিষেবা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে ক্ষমতার দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুই বাহিনীর এ লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available