আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে কিয়েভ রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
১১ মার্চ মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সংলাপ শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে কিয়েভের এই সম্মতির কথা জানানো হয়েছে। ওই বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে পুনরায় সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য দিতে রাজি হয়েছে।
সংলাপ শেষে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ দিনের একটি অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইউক্রেন।
এ ছাড়া, বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন বলেছে, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের উন্নয়নের জন্য একটি বিস্তৃত চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
প্যারিসভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জেদ্দার ওই বৈঠকে মার্কো রুবিওর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়েরমাক অংশ নেন। তবে বৈঠকে রাশিয়ার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকে নেতৃত্বের ভূমিকা রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি আরবে অবস্থান করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওই বৈঠকে অংশ নেননি। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি একটি ‘ইতিবাচক প্রস্তাব’, যা কেবল আকাশ ও সমুদ্রপথে লড়াই নয়, যুদ্ধের সম্মুখ সারির জন্যও প্রযোজ্য।
এদিকে, বল এখন রাশিয়ানদের কোর্টে মন্তব্য করে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এখন মস্কোর কাছে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, রাশিয়ানরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে। তবে তারা যদি এতে রাজি না হয় তবে ‘দুর্ভাগ্যবশত সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কী প্রতিবন্ধকতা আছে, তা আমরা বুঝতে পারব’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সমুদ্র ও আকাশ পথে আংশিক যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার বাইরে গিয়ে ‘আমাদের প্রস্তাবটি হলো গোলাগুলি বন্ধ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চান উল্লেখ করে মার্কো রুবিও বলেন, এই যুদ্ধে আজ মানুষ মারা যাবে, গতকালও মারা গেছে এবং-দুঃখের বিষয়- যদি যুদ্ধবিরতি না হয়, তাহলে আগামীকালও মারা যাবে।
প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। সেই থেকে এই যুদ্ধ চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া যুদ্ধে অগ্রগতি পাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড এখন রাশিয়ার দখলে। এর মধ্যে ক্রিমিয়াও রয়েছে, যে উপত্যকা ২০১৪ সালে দখল করে নিয়েছিল মস্কো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available