ডেস্ক রিপোর্ট: আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা কর্মীদের চাকরির নিশ্চয়তাসহ ৩০ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণের দাবি করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
এসব কর্মীদের জন্য সম্প্রতি ঘোষিত নীতিমালায় দৈনিক মজুরিতে নিয়োগ প্রাপ্তদের উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা এবং ৩০ কর্মদিবসের হাজিরা প্রদানকে যুক্ত করা এবং দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের বিনা কারণে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া ছাঁটাই না করার দাবি তুলে ধরেন তিনি।
১৯ এপ্রিল শনিবার ‘সরকার কর্তৃক ঘোষিত আউটসোর্সিং নীতিমালা ও দৈনিকভিত্তিক সাময়িক কর্মচারী নীতিমালা ২০২৫' সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি করেন।
বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তা না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারির আসে নেতাদের কাছ থেকে।
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে আউটসোর্সিং সেবা কর্মীদের জন্য ১৫ এপ্রিল ‘সেবা গ্রহণ নীতিমালা, ২০২৫' জারি করে সরকার। সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে বলা হয়, এই নীতিমালা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নববর্ষের বিশেষ উপহার।
নতুন এই নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হল—আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা এবং একই সঙ্গে সেবা কর্মীদের উৎসাহিত করা।
এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি বলেন, “চাকরির বয়সসীমা ৬০ বছর নির্ধারণ ও বয়স শিথিল করে প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের আত্মীয়করণ করতে হবে। চাকরির নিশ্চয়তার বিধানসহ ৩০ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ করতে হবে ও পেনশনের আওতায় নিয়ে এসে জিপি ফান্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে আত্মীয়করণ করতে হবে।”
আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারি অফিসে জনবল নিয়োগের ‘প্রক্রিয়াটি অমানবিক ও অন্যায্য’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে দুই ধরণের নিয়োগ প্রথা চলতে পারে না।”
এ সময় তিনি বর্তমান সময়ের সংকট তুলে ধরে বলেন, “আউটসোর্সিং মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না, অতিদ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদার/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যাদেরকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে অবিলম্বে চাকুরিচ্যুতদের চাকুরিতে পুর্নবহাল করতে হবে।
চাকুরি পুর্নবহাল ও বকেয়া বেতনের পরিশোধের লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাহবুবুর রহমান আনিস বিভিন্ন সরকারি অফিসের আউটসোর্সিং, দৈনিক মজুরিভিত্তিক ও বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়াদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান।
তা না হলে তিনি দাবি আদায়ে আবারও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়োগ করাদের নামে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দিয়ে সরাসরি কর্মচারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন দেওয়ার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক নুর, সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ অন্য নেতারা।
তাদের দাবিগুলো হল:
• ঠিকাদার প্রথা বাতিল করে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের অধীনে হস্তান্তর করতে হবে এবং কর্মরতদের বয়স শিথিল করে আত্মীকরণ করতে হবে।
• বার্ষিক ৫% হারে বেতন বাড়াতে করতে হবে।
• চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের তালিকা অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে চিঠি প্রেরণ করে চাকরি বহাল করতে হবে।
• বেতন বকেয়া কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করার জন্য স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি প্রেরণ করতে হবে এবং বেতন বকেয়া পরিশোধ কেন করা হয়নি তা জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
• সর্বনিম্ন বেতন ৩০ হাজার টাকা করতে হবে।
• মাসিক বেতন প্রদানে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে স্টার চিহ্ন প্রথা বাতিল করতে হবে।
• কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না ।
• চাকরির বয়সসীমা ৬০ বছর পর্যন্ত নিশ্চিত করতে হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available