নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪ জনশক্তিকে বিভিন্ন সময়ে গুম করার কয়েকদিন পর গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়ার সাথে জড়িতদের বিচার চেয়ে আজ ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে মো. আবুজর গিফারী, ওমর আলী, মো. রুহুল আমিন এবং ইস্রাফিল হোসেন এ অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ দায়ের করার সময় ছাত্রশিবিরের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান ও সহকারী আইন সম্পাদক আমানুল্লাহ আল জিহাদী (আদীব) উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন জয়পুরহাট জেলা সভাপতি আবুজর গিফারী ও সেক্রেটারি ওমর আলী সংগঠনের কাজে ঢাকায় আসলে তাদেরকে আব্দুল্লাহপুর থেকে সাদা পোশাকে র্যাব পরিচয়ে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে উত্তরা র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় ১ সপ্তাহ তাদের ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। এরপরে সেখান থেকে তাদেরকে রাজশাহী এবং পরবর্তীতে লালমনিরহাটের পাঁচবিবি থানায় নিয়ে চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন।
১৭ ডিসেম্বর তাদের সঙ্গে বোমা ও অস্ত্র দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জয়পুরহাট র্যাবের তৎকালীন মিডিয়া উয়িং। একইদিন দুপুরে পাঁচবিবি থানার নিকট তাদেরকে অস্ত্র মামলা দিয়ে হস্তান্তর করা হয়। অতঃপর সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশ নির্যাতন চালানোর পর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে তাদেরকে হাত ও চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় আওলায় ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত জায়গায়।
সেখানে পুলিশ দুজনের হাঁটুতে গুলি করে পা ঝাঁজরা করে দেয়। তাদেরকে স্থানীয় হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে রেফার করে দেয় সেখানেও তাদের চিকিৎসা না দিয়ে ঢাকার পঙ্গু হসপিটালে রেফার করে দেয়। এরপরে অপারেশন করে হ্রদ রোগ ইন্সটিটিউটে রেফার করা হয়। ২ জনেরই প্রচুর রক্তখরনে মাংস ৭৫ শতাংশ পচে যাওয়ায় ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ তে দুজনের অনুমতি সাপেক্ষে ২টি পা কেটে ফেলা হয়। হসপিটাল থেকে রিলিজ হলে ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়পুরহাট কারাগারে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট তৎকালীন যশোর জেলা পশ্চিমের চৌগাচা উপজেলার সাহিত্য সম্পাদক রুহুল আমিন এবং থানা সেক্রেটারি ইস্রাফিলকে সাংগঠনিক কাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়ার পথে চৌগাছা থানা আটক করে। ৪ আগস্ট তাদেরকে ডিবিতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গভীর রাতে কন্দলিতলার নির্জন মাঠে নিয়ে দুজনের হাঁটুতে পুলিশ গুলি করে পা ঝাঁজরা করে দেয়। সেখান থেকে তাদেরকে উপজেলা সরকারি হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই তাদের রেফার করা হয় যশোর সদর হসপিটালে। সেখানে ২ দিন চিকিৎসার পর কোন উন্নতি না হওয়ায় তাদেরকে ঢাকার পঙ্গু হসপিটালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ভর্তি হওয়ার ৭ দিন পর পায়ে পচন ধরলে সকলের সিদ্ধান্তক্রমে পা কেটে ফেলা হয়। তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে অপপ্রচার করে যে বন্ধুক যুদ্ধে ২ শিবির নেতা আহত। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দিয়ে ২ মাস চিকিৎসার পর পাঠিয়ে দেওয়া হয় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে।ন
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available