নিজস্ব প্রতিবেদক: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে জারি করা পৃথক রুলের ওপর আজ ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৫ ডিসেম্বর শুনানি শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
১৬ ডিসেম্বর সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাইকোর্টের এই বেঞ্চের কার্যতালিকায় দেখা যায়, পঞ্চদশ সংশোধনী-সংক্রান্ত পৃথক রিট আবেদন আজ কার্যতালিকার ১ ও ২ নম্বরে রয়েছে।
আদালতে এই রিট আবেদনের ওপর রাষ্ট্রপক্ষে রুলের শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের বিষয়ে রিটকারী সুশাসনের জন্য নাগরিকের বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ। এ ছাড়া জামায়াতের পক্ষে শিশির মনির ও ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী; ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে ইশরাত হাসান এবং চার আবেদনকারীর পক্ষে জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী ও ইন্টারভেনর হিসেবে হামিদুল মিসবাহ শুনানি করেন।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। এ ছাড়া অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়। আগের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান পাল্টে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয় সংযোজন করা হয়।
এর আগে রুল শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া বলেন, ‘সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী কাঠামো প্রবর্তন করা হয়। সংশোধনের পুরো প্রক্রিয়াই দুর্নীতিগ্রস্ত, যে কারণে পঞ্চদশ সংশোধনী অসাংবিধানিক ঘোষণার যোগ্য।’
সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে গত ১৮ আগস্ট সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চার ব্যক্তি হলেন, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। পরদিন ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে এই রুলের শুনানিতে বিএনপি, জামায়াত, ইনসানিয়াত বিপ্লবসহ কয়েকটি দল পক্ষভুক্ত হয়। অন্যদিকে গত অক্টোবরে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ১৭টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রাণীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। পরে এই রিটের শুনানি নিয়ে ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ আরেকটি রুল জারি করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available