নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষ্যে স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধির গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টয়লেট ক্লিনার ব্র্যান্ড হারপিক। এ উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে উন্নত টয়লেট সুবিধার প্রচার ও স্যানিটেশন পরিস্থিতির উন্নতির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বসহ খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞরা। হারপিক ব্র্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর নুসরাত ইমরোজ তিশা সহ এতে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের ওয়াশ বিশেষজ্ঞ মো. মনিরুল আলম, সাজেদা ফাউন্ডেশনের ডেপুটি সিইও মো. ফজলুল হক এবং রেকিট বাংলাদেশের মার্কেটিং ম্যানেজার সাবরিন মারুফ তিন্নি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেকিট বেনকিজার (বাংলাদেশ) পিএলসির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার মো. রাকিব উদ্দিন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিরাপদ স্যানিটেশন এবং টয়লেট স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বাংলাদেশে স্যানিটেশন সমস্যার মোকাবিলায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে মানুষ আরও উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা পেতে পারে।
হারপিক বিশ্বাস করে হাইজিন ও সুস্বাস্থ্য মানুষের মৌলিক অধিকার, কোনো বিলাসিতা নয়। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে স্বাস্থ্যবিধির উন্নয়নে কাজ করছে। এজন্য দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি যাতে বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। এদিন অনুষ্ঠানের বড় আকর্ষণ ছিল সাজেদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে হারপিক-এর অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ১,০০০ স্যানিটেশন কর্মী ও তাদের পরিবারকে ঘিরে হারপিক-এর সামাজিক কাজের উদ্যোগ। এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবীমা ছাড়াও দেশের ২৫০টি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে বিশেষ ছাড় ও স্বাস্থ্যবিধি সচেতনতা সেশন।
এছাড়া এই কর্মসূচির আওতায় শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে ‘দীপু-টুশির হাইজিন অভিযান’ নামের একটি কমিক বই প্রকাশিত হয়েছে। এটি শিশুদের মজার মজার গল্পের মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, টয়লেট পরিষ্কার করা, দূষণ এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করবে। বইটি স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হারপিকের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার একটি অংশ। হারপিক ভবিষ্যতে সামাজিক কাজের ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বিশ্ব টয়লেট সংস্থা এবং বিশ্ব টয়লেট দিবসের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক সিম যিনি ‘মিস্টার টয়লেট’ নামেও পরিচিত। অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয় যেখানে দেখা যায় জ্যাক সিম হারপিকের উদ্যোগে বাংলাদেশের স্যানিটেশন কর্মী ও তাদের শিশুদের জীবনের মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখায় হারপিক বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানের মূল বক্তা ড. তানভীর আহমেদ বলেন তার উপস্থাপনায়, উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্মের হার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে ১ শতাংশেরও কম মানুষ উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম করে। তবে নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছে দেশের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ, যা বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় অনেক কম। দ্রুত নগরায়ণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দুর্বল অবকাঠামো দেশের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন সাবরিন মারুফ তিন্নি। তিনি বলেন, ‘আমরা এই প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেছি যাতে মানুষ স্যানিটেশন নিয়ে তাদের গল্পগুলো, বিশেষ করে সংগ্রাম ও সফলতার কথা বলতে পারে। বাংলাদেশে নিরাপদ স্যানিটেশন কার্যক্রম এখনো চলমান এবং আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। অন্য অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে হারপিক বিষয়টি নিয়ে আরও বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে চায়। সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে স্যানিটেশন কর্মী এবং সাধারণ মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে অবদান রাখতে পেরে আমরা গর্বিত।’
প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্ব টয়লেট দিবস পালন করা হয়। এই বৈশ্বিক উদ্যোগ স্যানিটেশন সংকট নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এখনো বিশ্বের বড় সংখ্যক মানুষ নিরাপদ টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অনেকে উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম করেন যা স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। দিবসটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ৬ (এসডিজি) অর্জনের প্রচেষ্টা সমর্থন করে, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি, নিরাপদ স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available