নিজস্ব প্রতিবেদক: শেষ হলো তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার সকালে শুরু হয়েছিল যে সম্মেলন, ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সমাপনী অধিবেশন ও নৈশভোজের মাধ্যমে তা শেষ হয়।
গত বছরের মতো এবারও কার্য-অধিবেশনগুলো রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতিবছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের প্রথম দিন রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা করেন। এরপর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডিসি এবং বিভাগীয় কমিশনাররা নৈশভোজ করেন।
প্রথম দিন আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে তিনটি কার্য-অধিবেশন হয়।
দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট ভবনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দিক-নির্দেশনা গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসকরা। এরপর জাতীয় সংসদে স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় এবং নৈশভোজ করেন ডিসিরা। দ্বিতীয় দিন ২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে আটটি অধিবেশন হয়।
মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ দিনে মোট ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ১৪টি কার্য-অধিবেশন হয় ডিসিদের।
এবার সম্মেলনে মোট ৩৪টি অধিবেশন হয়। এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশন ৩০টি।
কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। কার্য-অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অধিবেশনগুলো শেষে সংশ্লিষ্টরা ডিসিদের প্রস্তাবের বিষয়ে তাদের অবস্থান ও দিক-নির্দেশনা দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন।
এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ৩৫৪টি প্রস্তাব পাওয়া গিয়েছিল। কার্য-অধিবেশনগুলোতে এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এবার ডিসি সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদারকরণ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়ের বিষয়গুলোকে আলোচনার জন্য প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
এবার সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিসি এবং বিভাগীয় কমিশনারদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়নি। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কর্মসূচি না মেলায় সৌজন্য সাক্ষাৎ রাখা হয়নি বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
সম্মেলন শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ডিসিদের আমরা একটা মেসেজ দিয়েছি, সামনে চ্যালেঞ্জ আছে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সেজন্য যাতে তারা প্রস্তুত থাকেন।
ডিসি সম্মেলন আয়োজনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা করি তারা (ডিসি) আরও উজ্জীবিত হয়ে চলে যাবেন।
শেখ আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সম্মেলন তিনদিনে শেষ করতে পারবো। তিন দিনেই শেষ করেছি, কিন্তু খুবই আঁটসাঁট হয়ে গেছে। আমরা একটা শিক্ষা পেলাম। উপদেষ্টারা বলে গেছেন যে, সামনের দিকে আমরা যখন এ সম্মেলন করবো, তখন এটি তিনদিন না করে চারদিনে করবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available