নিজস্ব প্রতিবেদক: মডেল মেঘনাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
১৩ এপ্রিল রোববার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে ঢাকায় তার বাসা থেকে পুলিশ আটক করার দুদিন পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আইন উপদেষ্টা বলেন, মডেল মেঘনার ব্যাপারে কিছু অভিযোগ আছে। সেসব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। তবে, তার গ্রেফতারের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। তার ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে ৭ হাজার ১৮৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। অনেক সময় এমন মামলা আসে, যেটা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা নয়। এ বিষয়ে আমাদের অফিসাররা খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা হ্যাকিং করা হয়েছে, সেটা নিয়ে একটি রিভিউ কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটিতে আমি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এ কমিটিতে গভর্নরসহ অনেকে রয়েছে। ব্যাংক থেকে ২ বিলিয়ন ডলার লুট করার পরিকল্পনা ছিল। এটা বাংলাদেশকে লুট করার একটা পরিকল্পনা ছিল। এটা হলে আমরা দুর্ভিক্ষে পড়ে যেতাম।
তিনি বলেন, বিগত সরকার এটার তদন্ত করতে গড়িমসি করেছে। এটা নিয়ে সিআইডি যে তদন্ত করেছিল, সেখানে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যেসব কর্মকর্তারা জড়িত ছিল, তাদের নাম তদন্ত কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সিআইডি রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে যাদের নাম এসেছিল তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেটা জানতে চেয়েছি এবং পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম নিয়েছে। অপরাধে জড়িত থাকলে মামলা দিয়ে গ্রেফতার না করে তাকে কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন বা প্রতিরোধমূলক আটক করা হলো, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল ১২ এপ্রিল শনিবার ডিএমপির ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রেজাউল করিম মল্লিককে।
আটক করার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসেছিলেন মেঘনা আলম। সেখানে তিনি বলছিলেন, তাকে কেউ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর থেকে এই মডেলের নিখোঁজ হওয়ার আলোচনা সামনে আসে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তার পরিচিতজন ও সচেতন নাগরিকদের অনেকে। তবে পুলিশ জানায়, মেঘনা আলমকে অপহরণ করার অভিযোগ সঠিক নয়। তাকে আইন অনুযায়ী আটক করা হয়েছে।
গত ১১ এপ্রিল শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত এই মডেলের আটকের বিষয়ে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে এ বিষয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য পাওয়া গেছে। সেখানে আইনের ধারা অনুযায়ী অপরাধের কথা উল্লেখ থাকলেও এই মডেল কীভাবে সেই অপরাধে জড়িয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available