খাইরুল ইসলাম মুন্না, বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনা বেতাগী পৌর শহরের পুরাতন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন এলাকায় মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে একটি হেলিকপ্টার। এটি দেখতে দূর-দুরান্ত থেকে ভিড় করছেন বিনোদন প্রেমীরা। কেউ ঘুরে দেখছেন হেলিকপ্টারটি কেউবা তুলছেন ছবি। ভেতরে ঢুকতেই অবাক হবেন যেকেউ। কারণ এটি আকাশচারী কোনো যান নয়, হেলিকপ্টারের আদলে তৈরি ভ্রাম্যমাণ রেস্তোরাঁ।
আর রেস্তোরাঁটি উদ্বোধনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর ছুটে আসেন। ভিন্ন ধরনের রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খেতে ভিড় করছেন। ভ্রাম্যমাণ এ রেস্তোরাঁ ভেতরে চলাচল করা যাবে স্বাচ্ছন্দ্যে। রয়েছে আরামদায়ক আসনও।
২৬৫ রকমের খাবার পাওয়া যাবে। এমনকি স্থানান্তর করা যাবে অনায়াসে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আমন্ত্রণ জানালে সেখানে পৌঁছে যাবে রেস্তোরাঁটি।
ব্যতিক্রম এই হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের প্রথম যাত্রা হয়েছে গত ১৬ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর ঝাউতলায়। যা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সড়কপথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পটুয়াখালী সদর ও মির্জাগঞ্জ ঘুরে রেস্টুরেন্টটি বর্তমানে পৌঁছেছে দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই একনজর দেখার জন্য দূর-দুরান্ত থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরা ছুটে আসতে শুরু করেছে।
এমনই একজন দর্শনার্থী শিক্ষার্থী তাকওয়া তারিন নুপুর বলেন, এটি সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে বেতাগী উপজেলায় নিয়ে আসার উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এর ফলে আমরা বিনোদন পেলাম।
কথা হয় ভ্রাম্যমাণ হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের নির্মাতা পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নের কাজীর হাট বাজারে ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি মো. মেহেদী হাসানের সঙ্গে।
তিনি জানান, শুরুর দিকে এ কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয়রা হাস্যরস করলেও পরে পেয়েছেন বাহবা। অভাবের সংসারে মেহেদীর লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। সংসারে ঘানি টানতে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন এবং তখন থেকেই ভিন্ন কিছু করার চিন্তা করেন তিনি। একপর্যায়ে বানিয়ে ফেলেন এ হেলিকপ্টার।
মেহেদী হাসান বলেন, বানাতে চেয়েছিলাম প্লেন। কিন্তু এতে খরচ বেশি হওয়ায় হেলিকপ্টার বানাই। অর্থ অভাবের কারণে আরিফুল ইসলাম ও আল-আমিনসহ আমরা তিন বন্ধু মিলে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করি। হেলিকপ্টারের ভেতরে রেস্টুরেন্ট বানিয়ে সারা বাংলাদেশ ঘোরার পরিকল্পনা করি এবং সে লক্ষ্যেই এটি তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, 'হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট' তৈরিতে প্রায় সাত মাস সময় লেগেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ রেস্টুরেন্ট নিয়ে ৬৪ জেলায় ঘুরতে চাই আমরা তিন বন্ধু। হেলিকপ্টারের আদলে এটি তৈরি হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে 'ভ্রাম্যমাণ হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট'।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available