নিজস্ব প্রতিবেদক: বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিজম চর্চার অন্যতম অনুষঙ্গ ছিলো সাদা পোশাকে পুলিশ মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং যথারীতি অস্বীকার করা। ডিবি পরিচয়ে র্যাব তুলে নিতো। র্যাব পরিচয়ে অন্য কোন সংস্থা। কিন্তু বেলাশেষে নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার শুনতে পেতো আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে কিছু জানে না। তারপর হয় অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যেত অথবা লাশও গুম করা হতো। এভাবেই গত ১৫ বছরে প্রায় দুইহাজার মানুষ মারা গেছেন বা গুম হয়েছেন। কিন্ত এই ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসকের অবসানের পরও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২৯ জানুয়ারি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা তৌহিদুল ইসলামকে যৌথ বাহিনী আটক করে। পরে শুক্রবার সকালে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। যেখানে গণ অভ্যুত্থানের সরকার বলা হচ্ছে। সেখানে পুলিশ হোক বা যৌথবাহিনী কারোরই সাদা পোশাকের এমন কালো আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। তাহলে রাষ্ট্রের মনোভাব পাল্টালো কোথায়!? শেখ হাসিনার পথেই কি হাঁটছে এই গণ অভ্যুত্থানের সরকার!? আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদাপোশাকের কালো অধ্যায়ের অবসানে প্রতিবাদমূলক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে জাগ্রত বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ এ সব কথা বলেন।
১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সমাবেশে জাগ্রত বাংলাদেশের (জেবিডি) সভাপতি আজমুল জিহাদ বলেন, রাতে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া, পরবর্তীতে লাশ ফেরত দেওয়া ন্যূনতম কোনো সভ্য দেশে অসম্ভব। গুহা যুগে মানুষ যেমন হিংস্র জন্তু জানোয়ারের ভয়ে গুহার ভিতরেও তটস্থ থাকতো। আজকে একই রকম ভাবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য তৈরি বাহিনীর ভয়ে যদি একটা স্বাধীন দেশে তটস্থ থাকতে হয়, তাহলে এ স্বাধীনতা, এ বিপ্লব, এ তাজা রক্ত ও জীবন উৎসর্গ সব বৃথা। আমার নিরাপত্তা রক্ষীই যদি আমার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়, তাহলে রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে আমি এমন নিরাপত্তা রক্ষী বেতন দিয়ে পালতে নারাজ।
তিনি বলেন, আমরা দেশের জনগণ দু-মুঠো খেয়ে পড়ে নির্ভয়ে বাঁচতে চাই। এটুকু অধিকারও আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে আসলে আমরা ওই অত্যাচারের মসনদ ছিনিয়ে নিবো। নতুন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় হত্যা চলবে না। তৌহিদুল ইসলামকে বিচারবহির্ভূত হত্যার জন্য রাষ্ট্রকে জবাব দিতে হবে। অবশ্যই জবাব দিতে হবে, কোন অধিকার বলে রাষ্ট্র কাউকে হত্যা করতে পারে?
জাগ্রত বাংলাদেশের (জেবিডি) সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভুঁইয়া বলেন, স্বৈরাচার বিতাড়িত করেছি, কিন্তু স্বৈরাচারী ব্যবস্থা ভাঙতে পারিনি যার পরিণতি বরণ করতে হলো তৌহিদুল ইসলামকে জীবন দিয়ে। আজও সাদা পোশাকের নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকার একমাত্র কারণ স্বৈরাচারী ব্যবস্থা বহাল তবিয়তেই আছে। ইন্টেরিম সরকারকে এর দায়ভার নিতেই হবে কেন এখনো বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটবে। এই ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড, মহিউদ্দিন মামুন বলেন, আমরা রক্ত ঘামে ভিজে রাষ্ট্রকে ট্যাক্স দেই, আর রাষ্ট্র আমাদের সেই ট্যাক্সের টাকায় সন্ত্রাস বাহিনী পালন করতে পারে না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আর কোন সন্ত্রাস চলতে দেয়া হবে না।
জাগ্রত বাংলাদেশ(জেবিডি) এর ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মহসিন অপু বলেন, আমরা সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। এর ব্যত্যয় হলে আমরা তা মেনে নেব না। আমরা সরকারকে বলতে চাই আপনার সঠিক পথে হাটুন মব কিলিং বন্ধ করুন নইলে জনগণ আবার তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে রাজপথে নেমে আসবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available