রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতিসহ, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বে ও মদদে অবৈধ সিগারেট, বাজার ফান্ড, পৌর টোল, বালুর মহাল দখল, মানুষকে জিম্মি করে টাকা নেওয়া, ঠিকাদারি কাজ বন্ধ করে চাঁদা আদায় করা, রাতের আঁধারে বিভিন্ন বাগানের গাছ কেটে নেওয়াসহ নানান অভিযোগে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওমর আলীসহ যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের মোট নয় জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে রাঙামাটি জেলা বিএনপি।
১৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার স্বাক্ষর করা তিনটি পত্রের মাধ্যমে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দলটির নেতৃবৃন্দ। দলের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে প্রাপ্ত পৃথক তিনটি পত্রের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। সংগঠনটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এ প্রতিবেদককে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উক্ত বহিষ্কারাদেশ পত্রে উল্লেখ করা হয়, দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করাসহ দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি (১) মো.ওমর আলী, (২) উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. নুর উদ্দিন, (৩) পৌর যুবদলের সদস্য নুর কবির, (৪) উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম জিন্নাত, (৫) পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন জুম্মান, (৬) কাচালং কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব সারওয়ার গাজী, (৭) পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদত মোল্লা, (৮) পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান ও (৯) উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আমির হোসেনের দলীয় সকল পদ-পদবি স্থগিত করা হয়েছে ।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ওমর আলীকে পৃথক পত্র এবং অপর আটজনকে আরেকটি পত্রের মাধ্যমে এই বহিষ্কারাদেশ প্রদান করা হয়।
রাঙামাটি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু নাছির ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রসিদ স্বাক্ষরিত উক্ত বহিষ্কারাদেশ পত্রে উল্লেখ করা হয়; গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, স্থানীয় বাঘাইছড়ি উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতৃবৃন্দের লিখিত অভিযোগ, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, আপনারা দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করাসহ দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন।
এরূপ অপকর্ম হতে বিরত থাকার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাঙামাটি জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দলের সকল নেতাকর্মীকে বহু-বার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আপনারা দলের দায়িত্বশীল পদে বহাল থেকে দলের সকল নির্দেশনা অমান্য করে এ সকল গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করেছেন।
আপনারা দলের সকল নির্দেশনা অমান্য করে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করায় আপনার সকল পর্যায়ের দলীয় সকল পদ পদবি ও পদের কার্যক্রম দলের গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো। উক্ত সময়ে আপনি কোন প্রকার দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও দলীয় পদ পদবি ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
এদিকে আরেকটি পত্রের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়, বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওমর আলী, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বে ও মদদে অবৈধ সিগারেট, বাজার ফান্ড, পৌর টোল, বালুর মহাল দখল, মানুষকে জিম্মি করে টাকা নেওয়া, ঠিকাদারি কাজ বন্ধ করে চাঁদা আদায় করা, রাতের আঁধারে বিভিন্ন বাগানের গাছ কেটে নেওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার সংবাদ গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমেও জেলা বিএনপিকে লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়।
দলের জন্য বিব্রতকর ও মানহানিকর এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে উল্লিখিত অভিযোগসমূহ সরেজমিনে তদন্ত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে লিখিত রিপোর্ট জেলা বিএনপি বরাবরে দাখিল করা জন্য একটি তদন্ত ও যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।
রাঙামাটি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবু নাছিরকে আহ্বায়ক করে উক্ত কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে, জেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী বাবর, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, এসএম শফিউল আজম, আব্দুল কুদ্দুছ। এই কমিটিকে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে জেলা বিএনপি বরাবরে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available