নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঁচ আগস্টের পর ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে, যেসব নেতা দেশ ছেড়ে যেতে পারেননি, তারা আছেন বড় বেকায়দায়। হামলা মামলার ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। পবিত্র ঈদুল ফিতরেও বাড়িতে গিয়ে নামাজ পড়তে পারছেন না। যারা এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন, রোষানলে পড়ছেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের।
অথচ দলটির বড় বড় নেতারা বিদেশে রাজকীয় ঈদ উদযাপন করে ছবি দিচ্ছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশে থাকা কর্মীরা। এরই মধ্যে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের ঈদ উদযাপনের ছবি দেখা গেছে।
দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঈদ উদযাপন করছেন। তার মতো বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী নেতারাও আছেন খোশ মেজাজে। অথচ কর্মীদের অভিযোগ, তাদের খবরও রাখছে না কেউ।
জানা গেছে, দলের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে ঈদ পালন করছেন।
এছাড়া দেশের বাইরে নিরাপদে ঈদ পালন করেছেন সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সুজিত রায় নন্দী, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক এমপি পংকজ দেবনাথ, আওলাদ হোসেন প্রমুখ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের একজন কর্মী বলেন, আমরা দেশে নানান জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন। নিজের ঈদগাহেও যেতে পারছি না। নেতারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না, আমরা ফোন দিলে ধরে না। অথচ তারা বিদেশে বসে রাজকীয় ঈদ উদযাপন করে সেলফি দিচ্ছেন। কর্মীদের সঙ্গে এটা তো মশকরা।
আওয়ামী লীগকর্মী সোহাগ উদ্দিন বলেন, আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে সুখ-দুঃখ মিলিয়ে পরিবার পরিজন দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে কুশল বিনিময় ছাড়া এবারের ঈদ কাটছে। প্রিয় পরিবার এবং দলীয় নেতাকর্মীদের অনেক অনেক মিস করি।
সামিউল আলম সাকিব নামের একজন বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন হুমকির শিকার হয়ে পলাতক ও দেশছাড়া। কেউ বাড়িছাড়া হয়ে আছে। সবাই যখন ঈদে মা, বাবা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদে ব্যস্ত, তখন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চার দেওয়ালে আবদ্ধ। পরিবার ছাড়া সব নেতাকর্মীদের ঈদ বেদনাদায়ক!
এ নিয়ে বিদেশে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর যে যেই দেশে আছে, সবাই অসামান্য নির্যাতন নিপীড়নের মধ্যে আছে। আজ আওয়ামী লীগ নাই, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে কোনো ঈদ আনন্দ নেই। শেখ হাসিনা নেই, দেশের মানুষের মনে শান্তি নেই। ইউনূস সরকার বাংলাদেশে একটা তাণ্ডব তৈরি করেছে। রাজনৈতিক শিষ্টাচার ধ্বংস করে দিয়েছে। এরমধ্যেও আমাদের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছিল। রমজানের সংযমের মধ্য দিয়ে ফের আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available