মেহেন্দিগঞ্জ মহিলা কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়
বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট বন্দরে অবস্থিত মেহেন্দিগঞ্জ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উক্ত কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকেরযেসব শিক্ষার্থী ফার্স্ট ইয়ার থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ অর্থ আদায় করছে। শিক্ষা বোর্ডের কথা বলে সেশন চার্জ বাবদ জন প্রতি ১৫০০ টাকা, উন্নয়ন ফি বাবদ ৩০০ টাকা এবং বিভিন্ন বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০০ টাকা হরে বিষয় প্রতি নিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।বিষয়টি নিয়ে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা কলেজ থেকে নির্ধারিত বিভিন্ন খাতে মোট ২১০০ থেকে ২২০০ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে (রুপালি ব্যাংক পাতারহাট শাখা) কলেজের একাউন্টে জমা দিচ্ছি। একাধিক সাবজেক্টে ফেল করা ছাত্রীদের কারো কারো কাছ থেকে ২৫০০ টাকা করেও নেয়া হচ্ছে। টাকা কম দিলে সেকেন্ড ইয়ারে উঠতে পারবো না এবং ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষাও দিতে পারব না।’জানা যায়, এবার কলেজে প্রায় ৭০০ জন শিক্ষার্থী ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ার থেকে সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে।অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কলেজের প্রিন্সিপাল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থ আদায় করেন, যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। অথচ, কলেজে লেখাপড়া তেমন একটা ভালো হয় না। বেশিরভাগ শিক্ষকই অদক্ষ ও ঠিকমতো ক্লাস নেন না। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এ কলেজটি বর্তমানে লেখাপড়ার মান কমে যাওয়ায় নিরাশ হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরা।এ বিষয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল সৈয়দ ওমর হাসান বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছি। এতে আমাদের কোনো ভুল নেই। যে টাকা নিচ্ছি সব টাকাই কলেজের উন্নয়নে খরচ করছি। আমরা যা করছি, সবকিছুই শিক্ষা বোর্ড অবগত আছে৷বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক লিয়াকাত হোসেন বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিকে নিউ ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তির সময় সেশন চার্জ প্রযোজ্য। এছাড়া আর কোনো সেশন চার্জ নেই এবং সেকেন্ড ইয়ারে ওঠার সময়ও কোনো চার্জ নেই। উক্ত কলেজের ব্যাপারে আমরা একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু ওই কলেজের পরিচালনা কমিটি রয়েছে, সেহেতু এ বিষয়ে ওই কমিটি সকল দায়দায়িত্ব বহন করবে। তবে, কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ পেশ করেন সেক্ষেত্রে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। ’বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পাতারহাট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষর নিয়ম বহির্ভূতভাবে টাকা নেয়াটা আমরা অবগত নই। তবে, বিষয়টিকে আমরা উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’