রামপালে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে পানির ট্যাঙ্ক বিতরণের অভিযোগ
সুজন মজুমদার, রামপাল: রামপালের ভোজপাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তরফদার মাহাফুজুল হক টুকুর বিরুদ্ধে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত পানির ট্যাঙ্ক বিতরণে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটানায় উপকারভোগীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দায়ীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।উপকূলীয় এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব পূরণে সরকারিভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে এসব পানির ট্যাঙ্ক বিতরণ করার কথা থাকলেও সেটি মানা হয়নি এমন অভিযোগ উঠেছে।উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ উপজেলার ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ৭৩ জন উপকারভোগীকে নির্ধারিত মূল্যে পানির ট্যাঙ্ক বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরকারিভাবে এক হাজার ৫০০ টাকা জমা নিয়ে ট্যাঙ্ক দেওয়ার কথা থাকলেও ভোজপাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তরফদার মাহাফুজুল হক টুকু ৩ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উপকারভোগী মো. হাবিব শেখ, আব্দুল জব্বার, কুলসুম বিবি জানান, তারা ট্যাঙ্ক প্রতি চেয়ারম্যানকে ৩ হাজার করে টাকা দিয়েছেন। একইভাবে অন্যান্য ওয়ার্ডের মতলেব শেখ, আব্দুল কাদের শেখ জানান, তারাও ৩ হাজার করে টাকা দিয়েছেন।অতিরিক্ত টাকা নেয়া ছাড়াও স্বজনপ্রীতি ও একই বাড়িতে একাধিক ট্যাঙ্ক দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও ট্যাঙ্ক দিয়েছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২ নং ওয়ার্ডের জলিল তরফদারের ছেলে রিপন তরফদার, মো. রুহুল আমিন তরফদার, মো. শফিকুল তরফদার, ৪নং ওয়ার্ডের হাজি ইমদাদুল হক হাওলাদারের ছেলে মো. তারিকুল ইসলাম সবুজ, ৬ নং ওয়ার্ডের আলহাজ্ব জুলফিকার আলীর দুই ছেলে জাহিদুল ইসলাম ও জাকারিয়া ইসলামকে ট্যাঙ্ক দেয়া হয়েছে। যাদের সবাই অবস্থাসম্পন্ন।ভোজপাতিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূরুল আমীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত সময় এমপির কোটায় বরাদ্দকৃত প্রচুর ট্যাঙ্ক বিতরণ করেছি। কোনো দিন কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ তাদের বাদ দিয়ে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তাদেরকে ট্যাঙ্ক দেওয়া হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে তদন্ত দাবি করেন।অভিযোগের বিষয়ে ভোজপাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তরফদার মাহাফুজুল হক টুকুর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিপক্ষ রিউমার ছড়াচ্ছে। এমনভাবে কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত ১৫ শত টাকার অতিরিক্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ অতিরিক্ত টাকা নিলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।অভিযোগের বিষয়ে রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেখ মোয়াজ্জেম হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা কেউ নিলে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।