কুমারখালীতে দাফনের ৩৮ দিন পর কবর থেকে মৃতদেহ উত্তোলন
কুমারখালী ( কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাফনের প্রায় ৩৮ দিন পর কবর থেকে তরিকুল শেখ (৩২) নামের এক ট্রাক চালকরের অর্ধগলিত মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।২২ জানুয়ারি বুধবার সকাল ১২টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের উত্তর কয়া বাইতু্ল মামুর কবরস্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই এলাকার ছাবদুল শেখের ছেলে ছিলেন।আদালতের নির্দেশে মরদেহটি উত্তোলনের সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন, কুষ্টিয়া সদর থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান, নিহতের স্বজন ও কয়েক শত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন।স্বজনের ভাষ্য, পাওনা টাকার জেরে তরিকুলকে লোহার গ্রিস গান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিল তার ট্রাকের হেলপার আল আমিন শেখ। তিনি খোকসার শিংগুড়িয়ার চরপাড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত তরিকুল শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ট্রাক চালক ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তরিকুল মোংলার বন্দরে থেকে পঞ্চগড় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কুষ্টিয়ার বাইপাস সড়কের জগতি এলাকায় পৌঁছালে তার কাছে গাঁজা (মাদকদ্রব্য) চান গাড়ির হেল্পার আল আমিন শেখ (২৭)। সে সময় গাঁজা না দিলে লোহার গ্রিস গান দিয়ে তরিকুলের মাথা, গলা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে আল আমিন। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আল আমিন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজায় এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিসেবে ওই দিনই ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি দাফন করা হয়।পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার দু-দিন পর ১৬ ডিসেম্বর হেল্পার আল আমিন আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের হত্যার দায় স্বীকার করে। নিহত তরিকুলের চাচা মো. আব্দুল্লাহ (৫৩) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হেল্পার আল আমিনকে আসামি করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আবেদন করেন। আদালত ২২ ডিসেম্বর মরদেহটি উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার মরদেহটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, তারিকুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাই হেল্পার আলামিন। টাকা না পেয়ে তরিকুলকে লোহার গ্রিস গান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিল। পরে আসামি হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না? তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মাদকদ্রব্য গাঁজা না পেয়ে চালককে হত্যা করেছিল হেল্পার আল আমিন। আদালতের জবানবন্দিতে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে আসামি কারাগারে রয়েছেন।জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন, আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।