চাঁপাইনবাবগঞ্জে কলেজ শিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, ধর্ষণের অভিযোগ ছাত্রীর
হানিফ মেহমুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের দুইটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ৫৬ সেকেন্ড ও ১১ সেকেন্ডের ভিডিও দুটিতে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় এক নারী ও অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে। বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ভিডিওতে থাকা ওই ছাত্রী। এমনকি ভিডিও নিজের ধারণ করা বলেও জানান কলেজ শিক্ষার্থী।অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের প্রভাষক। পাশাপাশি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাবের (টাউন ক্লাব) সদস্য। তার বাড়ি জেলা শহরের হুজরাপুর এলাকায়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর অভিযোগ, গত কয়েক মাস আগে মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের বাড়িতেই ঘটে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা। অভিযুক্ত শিক্ষক চন্দনের বড় ভাই নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোদাস্বের হোসেন সুমনের টিউশনের ছাত্রী বলে পরিচয় দেন।ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমরা চন্দনের বড় ভাই সুমনের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। প্রথম ঘটনার দিন আমাদের প্রাইভেট ছিল না, সুমন স্যারের কাছে একটা বই নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্যার আরেকটা ব্যাচ পড়াচ্ছিলেন। তাই স্যারের কথামতো পাশের একটি রুমে বসে অপেক্ষা করছিলাম। এই সময়ে চন্দন এসে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গেইট লাগিয়ে দেয়ায় চেষ্টা করলেও বের হতে পারিনি।তিনি আরও বলেন, প্রথমদিন এমন ঘটনা ঘটার পর আবার আমাকে ফোন দিয়ে ডাকে। এসময় আমি স্বেচ্ছায় তার বাসায় গিয়ে পরিকল্পিতভাবে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করি। শুধু আমার সাথেই মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন এমনটা করেছে তা নয়। আমার এক বান্ধবীসহ অনেক ছাত্রীদেরকেই পড়ানোর সময় সুযোগ পেলেই শরীরের আপত্তিকর জায়গায় স্পর্শ করে। এমনকি বাজে প্রস্তাব দেয়। তার চরিত্রেই সমস্যা আছে। মেয়েদের সাথে কথা বললেই নানারকম আজেবাজে কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি তার ছাত্রীদের সাথে কথা বললেই জানতে পারবেন। তবে ভিডিও ভাইরালের বিষয়টি তিনি বান্ধবীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন বলেন জানান তিনি। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই কলেজ ছাত্রী।এদিকে, ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভিডিও দুটি ভাইরাল হলে এ নিয়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি করেন অনেকেই। এ ঘটনায় ১৪ মার্চ শুক্রবার নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।কলেজের অধ্যক্ষ মো. তরিকুল ইসলাম সিদ্দিকী মুঠোফোনে বলেন, গত রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরাও ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। এ নিয়ে কি করা যায়, তা ঠিক করতে গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার ভাই নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোদাস্বের হোসেন সুমন মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনকি এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি হননি তিনি।চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাবের (টাউন ক্লাব) সাধারণ সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া জানান, এমন ভিডিওর বিষয়টি আমাদের জানা নেই।এ বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নেয়া হবে।চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান এশিয়ান টিভিকে বলেন, আপত্তিকর ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।