• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:১০:২৬ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:১০:২৬ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

হিমাগারে ৮০ হাজার বস্তা আলুতে পচন, দিশেহারা কৃষক

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: অবহেলায় হিমাগারে সংরক্ষণ করা রোমানা জাতের ৮০ হাজার বস্তা আলুতে পচন ধরেছে বলে অভিযোগ উঠেছে গঙ্গাদাশপুর ও মোসলেমগঞ্জ মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, সব আলু পচে গেছে। বস্তায় একটা আলু পচে যাওয়া মানে সব আলু নষ্ট হওয়া। এগুলো আর খাওয়ার উপযোগী থাকে না। তারা হিমাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা আলু পচনের পরেও হিমাগার কর্তৃপক্ষ তাদের ভাড়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত আলু বের করতে দিচ্ছে না।সরজমিনে গিয়ে আলু পচনের এমন ঘটনা দেখা গেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত গঙ্গাদাশপুর ও মোসলেমগঞ্জ মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগারে।  জানা গেছে, উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের একই মালিকের দুইটি হিমাগার মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগার এবং একই ইউনিয়নে মোসলেমগঞ্জ মান্নান বীজ হিমাগারে ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ওজনের প্রায় ৮০ হাজার বস্তার আলু পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এ অবস্থায় হিমাগার কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংবাদ দিয়ে তাদের পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত আলু বের করে দিচ্ছে। আলু হিমাগার থেকে বের করার পর বস্তা খুলে দেখা যায় ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ওজনের মধ্যে প্রায় ৩০ কেজি আলু পচে গেছে। বাজারে যেখানে ৬০ কেজি আলুর দাম ২৫শ টাকা সেখানে হিমাগারে পাইকারি বিক্রি করছে এক হাজার থেকে ১২শ টাকা। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীর প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৩শ থেকে ১৫শ টাকা।মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগারে চুক্তি ভিত্তিক আলু বাছাইকারি নারী শ্রমিক দোলোয়ারা বেগম, রওশন আরা ও ফিরোজার সাথে কথা বলে জানা যায়, যেখানে প্রতি বস্তায় ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ওজনের আলু থাকে সেখানে প্রায় ৩০ কেজি আলু পচে গেছে।উদয়পুর ইউনিয়নের গঙ্গাদাসপুর গ্রামের হযরত আলি বলেন, ‘মান্নান এন্ড সেন্স বীজ হিমাগারে রাখা আমার ২০০ বস্তা আলু নষ্ট হয়েছে। নষ্ট আলু নিতে গেলে তারা আমার আলুর ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উল্টা বস্তাপ্রতি ৩৪০ টাকা ভাড়া নিয়ে আলু ছাড়ছে।’ব্যবসায়ী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মান্নান এন্ড সন্স হিমাগারে রাখা আলু পচার কারণে আমাকে আগাম ২৫০ বস্তা আলু বের করে বিক্রি করতে হলো। আমার আলুর যা ক্ষতি হবে কোম্পানিকে দিতে হবে এটা আমার দাবি।’এল্লাগাড়ি গ্রামের ইয়াছিন বলেন, ‘এক বছর আগেও মান্নান হিমাগারে অনেক আলু পচে নষ্ট হয়েছিল। এবারও আমার আলুসহ অনেক কৃষকের আলু হিমাগারের ভিতরেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে আমরা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা কৃষকরা অভিযোগ করলেও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।’জমিনপুর গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমার ৪৫ বস্তা আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে। হিমাগার মালিকের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য গোপনে তারা পর্যায়ক্রমে আমাদেরকে সংবাদ দিচ্ছে, যেন দ্রুত পচে যাওয়া আলু হিমাগার থেকে বের করি।’হিমাগার কতৃপক্ষ জানান, ‘হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে আসা আলুর বয়স কম এবং আলুর সঙ্গে মাটি লেগে থাকার কারণে এই পচন ধরেছে। হিমাগারে রোমানা জাতের আলু ছাড়া অন্য কোনো জাতের আলুতে কোনো প্রকার পচন ধরে নাই।’কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় জানান, ‘কোনো কৃষক বা ব্যবসায়ী যদি এ বিষয়ে অভিযোগ দেয় তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হায়াত জানান, ‘এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’