বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটো সাংবাদিক আদর রহমানের তোলা ছবিতে বেরোবিতে চলছে ‘১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদ ও ২ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বেরোবির পার্কের মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর বর্বরোচিত হামলার নানান দৃশ্যপট দেখানো হয়েছে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। আলোকচিত্রে ফুটে উঠেছে আন্দোলনের দিন পুলিশ ও সরকারদলীয় বাহিনী দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার চিত্র।সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে নানান শ্রেণি-পেশার দর্শনার্থীদের ভিড় ছিলো লক্ষণীয়। প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানান বয়সী দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন আবু সাঈদ চত্বর সংলগ্ন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে। আজ প্রদর্শনীর শেষ দিনেও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিলো।বেরোবিতে ১৬ জুলাইয়ের অপ্রকাশিত দুর্লভ আলোকচিত্রের প্রদর্শনী বিষয়ে ফটোসাংবাদিক আদর রহমান বলেন, আমি প্রথমে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের প্রতি গভীরভাবে সমবেদনা প্রকাশ করছি। আমি গত ১৬ জুলাইয়ে সাড়ে ৩০০ ছবি তুলেছি। এর মধ্যে ৫০টি ছবি এখানে প্রদর্শন করা হয়েছে। আমি এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে ১৬ জুলাইয়ের অপ্রকাশিত ছবিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কখনও যদি আবু সাঈদকে নিয়ে গবেষণা করা হয় তাহলে হয়ত এই ছবিগুলো অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি।আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, আমাদের পরিবারে আমরা ৯ ভাই বোন। ভাইদের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবার ছোট। আমাদের পরিবারে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়তে পেরেছে আবু সাঈদ। আশা ছিল সে বড় হয়ে ভালো কিছু করে আমাদের পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। যারা আমার ভাইকে আঘাত করেছে ও এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল সবার কঠোর শাস্তি চাই।ঢাকা থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমরা আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়েছিলাম এখন এই আলোকচিত্র দেখার জন্য এসেছি। দেখে মনে হচ্ছে যে আমরা বাস্তব ঘটনা দেখতেছি । এরকম আলোকচিত্র সারা বাংলাদেশে প্রদর্শন করা হোক।’প্রদর্শনী দেখতে আসা রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হুজাইফা সামিয়া বলেছেন, আলহামদুলিল্লাহ ভালোই ছিল যেটুকু সময় এখানে অতিবাহিত করেছি। এখানে না আসলে জানতেই পারতাম না বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ভাই কতটা সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের আজকে এই বিজয়ঘন মুহূর্তকে আমাদের উপহার দিয়েছেন।উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট আবু সাঈদ চত্বর সংলগ্ন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।