নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলাদলি সৃষ্টি-শক্তি প্রদর্শন করা অন্যায় : এমপি গিয়াসউদ্দিন
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ: কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, ‘সামনে নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। জনগণের ভোট জনগণ দিবে। তাদের পছন্দমত ব্যক্তিই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দাবি জানানো হয়েছে দ্রুত নির্বাচনের জন্য। আমরা আশাবাদী এই নির্বাচন ২০২৫ সালের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এক বছর অতি দ্রুত পেরিয়ে যাবে। আমাদের এখন কাজ, প্রতিটি এলাকার মানুষের কাছে যাওয়া। সুখ দুঃখে তাদের সাথী হওয়া। জনসাধারণের আস্থা অর্জন করতে হবে। আমাদের উপরে জনগণের আস্থা আসলেই নির্বাচনে মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে।’২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মশালা বাস্তবায়ন ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয়।গিয়াসউদ্দিন বলেন, মনে রাখতে হবে জাতীয় নির্বাচন মুক্ত, স্থানীয় সরকার নির্বাচন মুক্ত নয়। আমরা লক্ষ্য করেছি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হচ্ছে। কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। এটা হতে পারবে না। এখন কেউ স্থানীয় নির্বাচন মুখে উচ্চারণ করতে পারবেন না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। যখন ওই নির্বাচন আসবে তখন দেখা যাবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের মধ্যে কেউ দলাদলি সৃষ্টি করবেন, কেউ আলাদাভাবে কাজ করবেন। যার যার ব্যক্তিত্ব প্রকাশের শক্তি প্রদর্শন করবেন, এটা সম্পূর্ণভাবে অন্যায় হবে। দলের ক্ষতি হবে। ব্যক্তি স্বার্থের চাইতে দলের স্বার্থের কথা চিন্তা করুন। সামনে নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হবে। সেটার জন্য আমরা আসেন প্রস্তুতি নেই।তিনি বলেন, বাহিরের শক্তি, পতিত সরকার বা অন্য কোনো স্বৈরাচার শক্তি নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে পারে। কোনো ষড়যন্ত্র যাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্বৈরাচার পরিণত হবে না। অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, দেশ যতদিন থাকবে সংস্কারের কাজ চলবেই। সংস্কারের অজুহাতে গণতন্ত্র বিঘ্নিত করা যাবে না। নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া যাবে না। ইতিমধ্যেই ভোটার তালিকা সংশোধন শুরু হয়েছে। সব এলাকায় সবাই এলার্ট থাকবেন। যারা এখনো ভোটার হননি তাদের ভোটার ভোটারের আওতায় আনতে হবে, ভুয়া ভোটারের তথ্য পেলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কাজ করতে হবে। প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় ভোটার তালিকা সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তার জন্য কাজ করতে হবে।সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমাদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। যে অভিযোগ করেছিল সে নিজে বলেছে আমি ভুল করেছি, আমি প্রত্যাহার করছি আমার অভিযোগ। এই বক্তব্য লিখিতভাবে অলরেডি নেতৃবৃন্দের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী অতি দ্রুত অল্প সময়ের মধ্যে অর্ডার বাতিল হয়ে যাবে। সে আমাদের মাঝে এসে কাজ করবে। গঠনতন্ত্রের একটা বিধান আছে। সভাপতি অনুপস্থিত থাকলে সিনিয়র সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। আমরা গঠনতন্ত্রকে ফলো করবো। যদি প্রথম যুগ্ম সম্পাদক দায়িত্ব না নেয়, তা নিয়ে পরবর্তীতে চিন্তা করতে হবে। কিন্তু সে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক কাজ করা হবে। এখানে সকলেই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব করার জন্য উপযুক্ত। দীর্ঘদিন কাজ করে আপনাদের প্রজ্ঞা এবং সাংগঠনিক সক্ষমতা বেড়েছে। আপনারা যে দায়িত্বই নিবেন সেই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।