রাত পোহালেই ঈদ, দম ফেলার সময় নেই মেহেরপুরের কামারদের
মেহেরপুর প্রতিনিধি: রাত পোহালেই পালিত হবে মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল আজহা। আর ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের কামার শিল্পীরা। ব্যস্ততা এতোই বেড়েছে যেন দম ফেলার সময় নেই। দিনরাত সমানতালে চলছে লোহার টুংটাং শব্দ। উপজেলার বিভিন্ন কামারপাড়ায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামার শিল্পীরা দা, বঁটি, ছুরি, ডাসা, চাপাতি, হাসুয়াসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।জেলার বামন্দী, জোড়পুকুরিয়া, তেরাইল, সাহারবাটি করমদী, দেবীপুর, আলমপুর, বারাদি বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে কামাররা তৈরি করছেন এসব সরঞ্জামাদি। কেউ আসছে নতুন করে শান দেয়ার জন্য, কেউ নতুন করে তৈরি করার জন্য, আবার তৈরি তা কেউবা কিনে নিচ্ছেন। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজারে এগুলো বিক্রি করছেন বিভিন্ন দামে।ছুরি শান দিতে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল কোরবানির ঈদ। তাই কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ছুরি শান দিতে এসেছি। ছুরিতে শান দেওয়া মাপ অনুযায়ী ৫০ থকে ১০০ টাকা করে নিচ্ছে।মো. হকমান আলী বলেন, আমি বড় ছুরি হাসুয়াসহ কয়েকটা জিনিস শান দিতে এসেছি। অতিরিক্ত ভিড়। আর এখন লোহার দাম বেশি তাই ছুরি, চাপাতি, ডাসাসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে।বামন্দী বাজারে ছুরি ও ডাসা ক্রয় করতে আসা মো. জামরুল ইসলাম বলেন, বাজারে লোহা ওজন করে বিক্রয় হচ্ছে। লোহার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করছে। আমি একটি ছোট ডাসা কিনেছি ৪৫০ টাকা দিয়ে, আর একটি ছোট ছুরি কিনেছি ১৫০ টাকা দিয়ে। বাজারে জিনিসপাতির অনেক দাম।ব্যবসায়ী বাদল কর্মকার বলেন, ডাসা বিক্রয় হচ্ছে ওজন বুঝে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছুরি ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কোরবানি সামনে রেখে চাহিদা বেড়েছে। লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রয় করতে হচ্ছে।কামার শিল্পী মো. আশাদুল ইসলাম বলেন, আধুনিক যন্ত্রপাতির তৈরি হচ্ছে, এ কারণে আমাদের চাহিদাও কমে যাচ্ছে মানুষ আধুনিক যন্ত্রপাতির দিকে বেশি ঝুকছেন। একসময় হয়তো বা এই পেশা বিলুপ্তি হয়ে যাবে, তবে কোরবানি আসলে আমরা একটু আশাবাদী থাকি। কোরবানি ছাড়া এসব কাজ আর আমাদের কাছে তেমন হয় না।তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন এ পেশায় আছি। আলহামদুলিল্লাহ কাজ ভালো হলে প্রতিদিন ১২০০-১৫০০ টাকা আয় হয়।