• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৩৯:০১ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৩৯:০১ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

সৌদিতে বন্দী ৩৯ প্রবাসীর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

ভৈরব প্রতিনিধি: বিনা অপরাধে সৌদী আরবের রিয়াদে বিভিন্ন থানায় আটক ভৈরবের প্রবাসী ৩৯ জনের মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সৌদী সরকারের পুলিশ তদন্ত করার অজুহাতে  তাদেরকে ১৪ মাস যাবত রিয়াদ শহরের বিভিন্ন  থানা হাজতে আটক করে রেখেছে। রিয়াদের  থানার হাজতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারের অভিযোগ।৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর ১২টায় ভৈরবের লুন্দিয়া গ্রামের শীতলপাটি সেতুর উপর ৩৯ জনের পরিবার পরিজন তাদের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। এসময় আটকদের পরিবারের আত্মীয়-স্বজন উপস্থিত ছিলেন। তারা সরকারের কাছে আকুল আবেদন করে জানিয়েছে আটকদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দেশে ফিরিয়ে আনতে। মানববন্ধনের সময় স্বজনদের মধ্য অনেক নারী-পুরুষ কান্নাকাটি করে।মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী পরিবারদের সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট সৌদী আরবের রিয়াদ শহরের ইশারা ডিরেকশন নামক স্থানে ভৈরবের লুন্দিয়া গ্রামের প্রবাসী দুটি পক্ষ তাদের পারিবারিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঝগড়া সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আটকরা এসব বিষয়ে অবগত ছিল না তাদের পরিবারের দাবি। ঘটনার দিন তারা রিয়াদ শহরের কর্মস্থলে কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে জানতে পারে তাদের এলাকার কতিপয় প্রবাসীরা পারিবারিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ করার পর তারা পালিয়ে গেছে। এতে এদিন কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। ঘটনার খবর পেয়ে সৌদী আরবের সিআইডি পুলিশ এদিন (৪ আগস্ট ২০২৩) রাত ১০ টায় সেই এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েকটি বাসা থেকে ৩৯ জনকে আটক করে রিয়াদের বিভিন্ন থানায় নিয়ে যায়।সে সময় আটকের পর থেকে ১৪ মাস যাবত এখনও তারা থানায় আটক আছে। সৌদী সিআইডি পুলিশ বলছে ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে ৩৯ জনের পরিবারের দাবি আটকরা বাড়িতে স্বজনদেরকে বলছে তারা সংঘর্ষের সাথে জড়িত ছিল না। যারা সংঘর্ষে জড়িত তারা পালিয়েছে। ১৪ মাস যাবত তারা রিয়াদের থানায় আটক থাকায় সেখানে কাজকর্ম করতে পারছে না বা দেশেও আসতে পারছে না। এদিকে ৩৯ জনের পরিবার তাদের স্বজনদের আয়ের টাকা না পাঠাতে পারায় পরিবারগুলি অর্থ কষ্টে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। অপরদিকে দেশে তারা চিন্তিত হয়ে আছে, বিনা অপরাধে তাদের বিচারে সাজাও হতে পারে এমনটা শংকায় রয়েছে। তারা আমাদের সরকারের মাধ্যমে সবাইকে মুক্ত করার জন্য দাবি জানিয়েছে।আটকরা হলেন- শ্রীনগর গ্রামের কামরুল হাসান, একই গ্রামের শহীদুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, শিমুলকান্দি গ্রামের মো. ইমান, ছোট রাজাকাটা গ্রামের কামাল মিয়া, একই গ্রামের মাছুম মিয়া, চাঁনপুর গ্রামের লতিব মিয়া, তৌফিকুর রহমান, ছাগাইয়া গ্রামের রিজাউল ইসলাম, একই গ্রামের খায়রুল মিয়া, সোহেল রানা, মামুন মিয়া, ভবানীপুর গ্রামের মহিবুল্লাহ, সুলাইমানপুর গ্রামের আরমান মিয়া, চন্ডিবের গ্রামের পারভেজ আহমেদ, লক্ষ্মীপুর গ্রামের শ্রবাণ আহমেদ, লুন্দিয়া গ্রামের কাইয়ূম, একই গ্রামের মো. হাসান, আবুল কালাম মোল্লা, সাগর মিয়া, ফারুক মিয়া,  নরসিংদীর বেলাব থানার সৌরভ মিয়া, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগন্জ উপজেলার বাউরখাড়া গ্রামের জাকির হোসেন, ভৈরবের গোছামারা গ্রামের শান্ত।এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের বাড়ির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৌদী আরবে দুই পক্ষ ঝগড়া সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয় ১৪ মাস আগে। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে সৌদী পুলিশ আটক করতে না পেরে আমার ভাই শরীফুল ইসলামসহ ৩৯ জনকে আটক করে রাখে। আমরা সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসসহ এদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ঘটনাটি অবগত করেছি। কিন্তু কোন ফল পাচ্ছি না। তিনি বলেন আমরা এখন চিন্তিত।আরেক ভুক্তভোগী বেলায়েত হোসেন বলেন, আমার ভাই কামরুল হাসান বিনা অপরাধে ১৪ মাস যাবত সৌদির রিয়াদের থানায় আটক। তার স্ত্রী সন্তানরা না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরাও চিন্তিত। সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসকে ঘটনা অবগত করেছি কিন্তু দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত তাদের মুক্তির বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।জমিলা বেগম নামের এক মহিলা বলেন, আমার ছেলে ১৪ মাস যাবত বিনা অপরাধে রিয়াদের থানায় আটক। বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছে না, অপরদিকে আমরা চিন্তিত। দুটি নাতি নিয়ে আমি কষ্টে আছি।ভৈরবের শ্রীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনউর রসিদ জানান, আমার গ্রামেরসহ এলাকার ৩৯ জন সৌদী প্রবাসী ১৪ মাস যাবত সৌদির রিয়াদের বিভিন্ন থানায় বিনা অপরাধে  আটক রয়েছে। তারা আজ মানববন্ধন করেছে। সরকারের কাছে আবেদন তাদের মুক্তির বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে।ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. রেদুয়ান আহমেদ রাফি এ বিষয়ে জানান, বিষয়টির ব্যাপারে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনগণ। স্মারকলিপিটি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিব এবং কর্তৃপক্ষের সাথে ফোনে কথা বলে পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা অনুরোধ করব।