দৌলতপুরে অবাধে চলছে কৃষি জমির মাটি বিক্রয়, নিরব প্রশাসন
দৌলতপুর প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিনে রাতে সমানে কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। প্রতিদিন শত শত সেলো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ স্টিয়ারিং ও লাইসেন্সবিহীন ড্রাম টাক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে।একদিকে গাড়ির বিকট শব্দ, অন্যদিকে নেই কোন ফিটনেস। এছাড়া নেই কোন লাইসেন্স, আবার অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরাও হয়ে উঠেছে এসব অবৈধ গাড়ির ড্রাইভার। যে কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।লোকাল সড়কে ড্রাম ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও নিয়ম মানছেন না কেউ। পুলিশ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে চলছে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন ও বিক্রয়ের রমরমা ব্যবসা। এভাবে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার ফলে জমি হারাচ্ছে উর্বরতা, বিনষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এই মাটি ব্যবসা। উপজেলায় কৃষি জমি দখল করে ২৬টি অবৈধ ইটভাটা চালানো হচ্ছে। আর এ সকল ইটভাটাই প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হাজার থেকে ২৫শ’ ট্রলি মাটি ব্যবহার হচ্ছে ইট বানানোর কাজে।বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা গেছে, কৃষকদের কাছ থেকে মাটির দালালরা এক ট্রলি মাটি কিনছে ৩শ থেকে ৪শ টাকায়। স্টিয়ারিং গাড়ি ভাড়া ২শ থেকে ৩শ টাকা এবং এসব মাটি ভাটায় বিক্রয় করছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা। অধিক লাভের আশায় আইন থাকলেও প্রয়োগ না হওয়ার কারণে অনেকেই ঝুঁকছে এ মাটি ব্যবসার দিকে।তারাগুনিয়া এলাকার রবকুল, স্বরুপপুর এলাকার রানা, ঘোড়ামারা এলাকার সাদ্দামসহ এমন অনেকেই আছে যারা বছরের পর বছর ধরে পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চালিয়ে আসছে মাটির ব্যবসা।উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার (মাটি বিক্রেতা) মো. মজনুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের তারাগুনিয়া তেল পাম্প এলাকার রেফেজ মন্ডলের ছেলে মাটি ব্যবসায়ী রবকুলের কাছে তার নিজ ফসলি জমির মাটি বিক্রয় করছেন ১শ ট্রলি মাটি ৪০ হজার টাকা দরে।মেম্বার মজনুর আরও বলেন, পুলিশ ও প্রশাসন ঝামেলা করলে সবকিছুই দেখেন মাটি ব্যবসায়ী রবকুল। মেম্বাবের কথা মতো পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই মূলত রবকুল এ মাটি ব্যবসা করে আসছে দির্ঘদিন ধরে।মাটি ব্যবসায়ী রবকুলের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি মাটি ব্যবসার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মাটি কিনে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রয় করি। আমি ব্যাতীত অনেকেই আছে এ মাটির ব্যবসা করেন। কৃষি জমির মাটি কাটা অবৈধ জেনেই অনেকে এ ব্যবসা করে। আপনার কিছু চাওয়া থাকলে বলেন।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিক বলেন, অবৈধ মাটি উত্তোলন বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে। মাটি উত্তলনের খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আইনয়ানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।মাঝেমধ্যে লোক দেখানো দুই একটা অভিযান চালানো হলেও থামানো যাচ্ছে না এ সকল মাটি ব্যবসায়ীদের। প্রকাশ্যে পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন অবৈধ মাটি ও ইটভাটা চালানো হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না কেন তা নিয়েও প্রশ্ন জনমনে।