বদলগাছীতে বিয়ে বাড়িতে নাচ-গানের বদলে কোরআন খতম
বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছীতে বিয়ে বাড়িতে যেখানে নাচ-গান আর হৈহুল্লা হয়, সেখানে ভিন্ন আয়োজন করলেন কনের বাবা ইমরুল কায়েস সুহেল।১৭ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে উপজেলা মিঠাপুর ইউনিয়নে বিয়ের অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার এতিম শিশুদের দাওয়াত দিয়ে কোরআন খতমের আয়োজন করেন তিনি। এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এলাকাবাসী।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিঠাপুর ইউনিয়নের ভেরেন্ডি ৯নং ওয়ার্ডের ইমরুল কায়েস সুহেলের বড় মেয়ে সামিয়া তাহসিন আক্তারের (২০) সাথে কোলা ইউপির কোলা পালশা গ্রামের মো. ইয়াকুব মহুরীর ছেলে আবু ছাহেলা মোহাম্মদ সজীবের (২৪) বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, ব্যতিক্রম ধরনের এ বিয়েতে আয়োজন হয়নি গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। বাজানো হয়নি কোনো গান। নাচ গান পরিহার করে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ২৫ জন এতিম শিশুকে দাওয়াত দিয়ে কোরআন তেলওয়াতের ব্যবস্থা করেন কনের বাবা মো. ইমরুল কায়েস সুহেল। এতে এলাকার মানুষেরা মাঝে অন্য রকম অনুভূতি দেখা দিয়েছে। এলাকার মানুষের প্রশংসায় ভাসছে কনের বাবা। অপসংস্কৃতি বাদ দিয়ে ইসলামি সংস্কৃতি ফিরে আসবে বলে মনে করেন এলাকার সাধারণ মানুষ।খাদাইল সরকার পাড়ার হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ নুরে আলম বলেন, বিয়ে একটি সর্বজন স্বীকৃত পবিত্র এবং সামাজিক বন্ধন। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণী সমাজের এবং ধর্মীয় রীতিনীতি সমাজের এবং পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা যেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই ছেলেমেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা স্পষ্ট করে বলছেন। বিয়ের মাধ্যমে দুইজন ব্যক্তি সংসার শুরু হয়। তাই বর্তমান সমাজে বিয়ে বাড়ি সাধারণত নাচ-গান আর অন্য রকম আয়োজনের মধ্যেই দিনটি অতিবাহিত করার কথা। কিন্তু কনের বাবার পক্ষ থেকে যে কোরআন তেলওয়াতের আয়োজন করা এটা প্রশংসনীয়। আমরা চাই এ রেওয়াজ যদি সব জায়গায় ছড়িয়ে পরে তবে সমাজের বেহায়াপনা আর থাকবেনা বলে মনে করেন হাফেজিয়া মাদ্রাসার এ শিক্ষক।কনের বাবা ইমরুল কায়েস সুহেল বলেন, আমার মেয়ে সামিয়া তাহসিন আক্তারের সাথে মো. ইয়াকুব মহুরির ছেলে মো. সজীব সাথে গত দেড় মাস আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ের প্রথম রিতী কাবিন করে রাখা হয়েছিল।তিনি আরও বলেন, শুক্রবার ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একজন হাফেজ স্বামীর হাতে আমার মেয়েকে তুলে দিয়েছি। আর এ জন্যই আমি অন্য কোনো আয়োজন না করে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করেছি। আমরা বিপদে পড়লে যেখানে আল্লাহকে ডাকি এবং সে বিপদ থেকে আল্লাহ ছাড়া কেউ রক্ষা করার থাকেনা তাই আমি বিশ্বাস করি এতে আমার মেয়ের সংসার জীবন অনেক সুখে ও স্বাচ্ছন্দ্য সুখের হবে ইনশাআল্লাহ।মিঠাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ ফিরোজ হোসেন জানান, কাবিনের সময় আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। মেয়ের বাবা মো. ইমরুল কায়েস সহেল একজন নামাজি ও ভালো মনের মানুষ। আর এ জন্যই তার এমন কোরআন খতমের আয়োজন। আর আমি এ আয়োজনে ব্যক্তিগত ভাবে খুব খুশী। আমার ইউনিয়নে এর আগে কখনো এমন কোনো আয়োজন হয়নি।